



#সুমন রায়, রায়গঞ্জঃ আত্মবিশ্বাস থাকলে সমস্ত প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে যে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, তা প্রমাণ করলেন রায়গঞ্জের দক্ষিণ বীরনগরের গৃহবধূ রূপা গুপ্তা। গত ৪ সেপ্টেম্বর ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস (২০১৮) এর ফলাফল প্রকাশিত হয় যেখানে জয়েন্ট বিডিও পদে ১৬ নম্বরে নাম আসে রূপা গুপ্তার। বর্তমান বাজারে যেখানে চাকরির খোঁজে মানুষ দিশেহারা সেখানে প্রাইমারীর মত সরকারী চাকরি ছেড়ে রূপা মনযোগ দিয়েছিলেন সিভিল সার্ভিসে।রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেজুয়েশনের পর ২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পান রূপা। তারপর ২০১৫ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দেন।
২০১৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পুনরায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর সাফল্যের ছোঁয়া পেলেন রূপা গুপ্তা। এ বিষয়ে রূপা গুপ্তা বলেন,”প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিলো সিভিল সার্ভিসে কাজ করার তবে প্রাইমারি পরীক্ষায় পাশ করায় শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম।কিন্তু সিভিল সার্ভিস অফিসার হব এটা ভেবেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দিই।কোনো রকম কোচিং ছাড়া শুধু মাত্র অনলাইন স্টাডি ও সেল্ফ স্টাডির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে গেছি। অবশেষে এই সাফল্য এসেছে।”
তিনি আরও বলেন সাংসারিক জীবনের সাথে পড়াশুনো এই দুটো সামলানো একটু কঠিন ছিলো, তবে সারাদিন সংসারের কাজ করে পড়াশুনোর জন্য বেশি সময়টা রাতেই দিতাম এবং আমার স্বামী আমায় সহায়তা না করলে এই সফলতায় পৌঁছানো আমার জন্য আরও কঠিন হত।” রূপা গুপ্তার স্বামী নয়ন কুন্ডু তিনিও পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি এই প্রসঙ্গে জানান,” রূপা মানসিক ভাবে ভীষণ শক্ত। ‘ও’ প্রাইমারির চাকরি ছাড়বার সময় একটু ভয় হয়েছিলো তবে ওর নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস যা আমাকেও আত্মবিশ্বাস দিয়েছিলো। ওর সমস্ত ব্যাপারে আমি পাশে থাকবার চেষ্টা করেছি আগামীতেও ওর সব বিষয়ে পাশে থাকবো। ওর এই সাফল্যে আমি ভীষণ খুশি।”
আপাতত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল বের হলেও জয়েনিং-এর ব্যাপারে তেমন ভাবে কোনো সরকারী নির্দেশিকা আসেনি বলেই জানান রূপা গুপ্তা। তিনি বলেন, করোনার কারণে হয়তো একটু দেরি হচ্ছে তবে খুব তাড়াতাড়ি জয়েনিং লেটার হাতে পাব। রূপার এই সাফল্যে রায়গঞ্জবাসী ভীষণ গর্বিত। একজন গৃহবধূর এই লড়াইকে সকলে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
