



#সুমন রায়, রায়গঞ্জঃ পাখিদেরও সংসার হয়, আর এই সংসার করার তাগিদে বিদেশ থেকে বিদেশি পাখিরা পাড়ি দেয় রায়গঞ্জের পক্ষীনিবাসে। প্রতিবছরই বর্ষা আসতেই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আসে কুলিক নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কুলিক পক্ষীনিবাসে। তারপর তারা কুলিকের বুকে ডিম পাড়ে, এরপর বাচ্চাদের লালল পালন করে বড় করে আবার তারা ফিরে যায় বিদেশে। জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাখিরা এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি করে।
প্রতিবছর রায়গঞ্জবাসী কিংবা কুলিকে ভ্রমণ করতে আসা পর্যটকরা পাখীদের দেখতে ভিড় করে পক্ষীনিবাসে। সাদা পাখির রঙে ঢেকে যায় সবুজ গাছ তবে গত বছর এবং এবছর করোনার জন্য সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় এই সুদৃশ্য থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। করোনার জেরে এবছর ১৬ মে থেকে শুরু হয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ। পক্ষীনিবাসে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ায় পাখিদের বসবাসে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে কুলিকে যার জেরে গতবছর পাখিদের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বন দপ্তর সূত্রে খবর, গত বছর ৬৮,১৫৯টি ওপেন বিল স্টক, ৭৯৫৯টি নাইট হেরন, ১৩,০৯৪টি ইগারিট, ১০,৪২২টি কর্মোরেন্ট এসেছিল। অনুকূল আবহাওয়ার পাশাপাশি বর্ষার কারণে পক্ষীনিবাস সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে মাছ এবং শামুক পাওয়া যায়। ফলে রেকর্ড সংখ্যক পরিযায়ী পাখি এসে বাসা বাঁধে কুলিক পক্ষীনিবাসে। এ বছরও এই সংখ্যাকে ছাপিয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। পাখি ও পশুপ্রেমী সংস্থার সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার দাবি, নজরদারি বাড়ালে এবছরও পক্ষীনিবাসে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা আরও বাড়বে।
কারণ লকডাউনে দূষণমুক্ত পরিবেশ পাখিদের পক্ষে অনুকূল। অতিরিক্ত বন আধিকারিক সুতাংশু গুপ্ত জানান,গতবছর প্রায় এক লাখের কাছাকাছি পাখি এসেছিলো এবছরও অনেক আগে থেকে পাখি আসা শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে এর আগের বছরের থেকে এবছর সংখ্যাটি ছাপিয়ে যাবে। কারণ হিসেবে লকডাউনে পরিবেশের যে পরিবর্তন হয়েছে তার ফলে হয়েছে বলে অনেকাংশে তিনি মনে করছেন। তবে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় অনেকটা বেশি মন খারাপ রায়গঞ্জবাসীর।
পাখিদের দেখতে কুলিক পক্ষিনিবাসে না যেতে পেরে নিজের মন খারাপের কথা জানালেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা জাগরী চট্টোপাধ্যায়, তিনি বলেন, “জন্মসূত্র রায়গঞ্জবাসী হওয়ায় কুলিক পক্ষীনিবাস আমাদের কাছে গর্বের তবে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় আমরা পক্ষী নিবাসে যেতে পারছি না। যদিও পাখিদের জন্য ভলো তবে আমাদের জন্য মন খারাপের কারন।”
