



#দেবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, মালবাজার: মার্কিন মুলুকের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, আরভিন ক্যাম্পাসের আমন্ত্রণে সারা দিয়ে “ক্ল্যামেডিয়া ব্যাকটেরিয়া” বিষয়ে গবেষণা করতে জুনিয়ার সাইন্টিস্ট পদে যোগ দিতে চলেছেন মালবাজার শহরের প্রতিভাবান মেয়ে রোজলিন এক্কা। মালবাজারের মতন ছোট এক শহর থেকে সুদূর মার্কিন মুলুকে গবেষণা করবার সুযোগ পাওয়ায় শহরের এক্কা পরিবার সহ প্রতিবেশী সকলেই আনন্দিত। এ প্রসঙ্গে শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রিন্সিপাল দিলীপ সরকার বলেন, ” আমাদের বিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর সাফল্যে আমরা গর্বিত। চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় ও আরও সফলতা পাবে “।
এ প্রসঙ্গে মাল মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ তারক বর্মন বলেন, ” যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ক্ল্যামেডিয়া ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এ বিষয়ে আরও বৃহত্তর ভাবে গবেষণার প্রয়োজন। এ বিষয়ে শহরের কৃতী ছাত্রীর অগ্রসর চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেকটাই উপকারে লাগবে “। এ প্রসঙ্গে রোজলিন বলেন, ” মানুষের সেবায় আমি চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে আরও গবেষণা করতে চাই। তিনি বলেন গবেষণা শেষে বিদেশেই নয় নিজের দেশে ফিরে আসার ষোলোআনা ইচ্ছেই তার রয়েছে”।
শহরের ১৫ নং ওয়ার্ডের নিবাসী এক্কা পরিবার। রোজলিনের বাবা ইমানুয়েল এক্কা ডামডিম যোগেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক, মা মেরি গ্রেগরি এক্কা গৃহবধূ। রোজলিনের ভাই স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলের ওয়েস্টার্ন মিউজিকের শিক্ষক। বোন এঞ্জেলিন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিওলজি নিয়ে স্নাতকোত্তর করছেন। রোজলিন শহরের সিজার স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ভুবনেশ্বরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন এন্ড রিসার্চ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। শহরের এই মেধাবী পরে গবেষণার কাজে নিযুক্ত হন দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইমিউনোলজিতে। সেখানে তিনি “হিউমান ম্যালেরিয়া প্যারাসাইট” বিষয়ের ওপরে গবেষণা করে উচ্চ প্রশংসিত এবং ডক্টরেট হন। তার করা বিভিন্ন গবেষণাধর্মী লেখা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে।
ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরভিন ক্যাম্পাসে ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেল বায়োলজি বিভাগে তিনি তার গবেষণা করবেন। গত মার্চ মাসেই যোগ দেবার কথা থাকলেও করোনা আবহে তা আর হয়ে ওঠেনি। আগামী ৩রা অক্টোবর রোজলিন মার্কিন মুলুকে তার নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন। বাড়ির বড় মেয়ের অভাবিত সাফল্যে পরিবারের সকলেই দারুন খুশি। বাবা ইমানুয়েল এক্কা বলেন ও জীবনে আরও বড় হোক, সফলতার সাথে এগিয়ে যাক আগামীর পথে।
