



#সুমন রায়, রায়গঞ্জঃ প্রিয় মানুষকে না পাওয়ার আঘাত অনেক সময় মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলে আমাদের মধ্যে। কেউ বিচ্ছেদ সহ্য করতে না পেরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এমনই ঘটনা ঘটেছিলো রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা চঞ্চল তরণী দাসের সঙ্গে। স্থানীয় একটি মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন ভালোবাসার সম্পর্কে থাকার পর সেই মেয়েটির অন্য কারও সাথে বিয়ে হয়ে যায় এবং সেই ঘটনা সহ্য করতে না পেরে দীর্ঘ কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে চঞ্চল। মুদির দোকানে কাজ করে সংসারের সাহায্য করতেন চঞ্চল। বাবা গোপীনাথ তরণী দাস একজন বাদাম বিক্রেতা, তার পক্ষে ছেলের চিকিৎসা করাটা সম্ভব ছিলো না।
তখন তিনি খবর দেন রায়গঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মুক্তির কান্ডারীকে। তারপর আইন অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর চঞ্চল তরণী দাসকে পাঠানো হয় বহরমপুরের মানসিক হাসপাতালে। সেখানে প্রায় ৩ বছর চিকিৎসা চলার পর অবশেষে আজ বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় চঞ্চলকে। এই ব্যাপারে চঞ্চলের মা দুর্গারানী দাস জানান, ছেলের যখন এমন অবস্থা হয়েছিলো তখন বুঝে উঠতে পারিনি কী করব। তখন মুক্তির কান্ডারীকে খবর দেওয়া হয়। ওরাই যাবতীয় ব্যবস্থা করে আমার ছেলে আজ সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছে। ওনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
এই ব্যাপারে চঞ্চলের সাথে কথা বলতে চাইলে সে তেমন কিছু না বলতে পারলেও সে যে একবারে সুস্থ আছেন সে কথা জানিয়েছেন এবং হাসপাতালে থাকাকালীন নার্সরা তার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেছে সে কথাও তিনি জানিয়েছেন। রায়গঞ্জ মুক্তির কান্ডারীর কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, “আমরা যখন খবর পাই তখন ওর বাড়িতে যাই। আমাদের দেখে প্রথমে মারতে আসে। পরে আমরা ওর হাত-পা বেঁধে দিই। এরপরই আমরা ওর চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নিই। আইনত সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে চঞ্চলকে বহরমপুরের মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। দীর্ঘ আড়াই বছরের উপরে থাকার পর ওকে আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। একজন মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা ভীষণ খুশি। ওর জন্য একটা কাজের সন্ধান করছি।
