




#স্তন ক্যান্সার কি?
স্তন ক্যান্সার হল স্তনের কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি, যেটা রক্তনালির লসিকা ও অন্যান্য মাধ্যমে শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।
#ভারতে স্তন ক্যান্সারের পরিসংখ্যানঃ GLOBOCAN 2020 এর রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্যান্সার হয় স্তন ক্যান্সার, য়া মোট ক্যান্সার রোগীর প্রায় ১৩.৫ শতাংশ এবং মোট মহিলা রোগীর প্রায় ২৬.৩ শতাংশ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। শুধুমাত্র ২০২০ সালেই ভারতে নতুন স্তন ক্যান্সার ডায়াগনোসিস হয়েছে ১.৭৮ লাখ এবং ২০২০ সালে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ৯০ হাজার মহিলার। স্তন ক্যান্সার মহিলাদের রোগ মনে হলেও ১-২ শতাংশ পুরুষও এই রোগে আক্রান্ত হয়।
#স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকির কারনগুলা কিকি?
১. মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার প্রবনতা সবচেয়ে বেশি।
২. বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারের প্রবনতা বৃদ্ধি পায়।
৩. স্তন রোগ বা স্তন ক্যান্সারের অতীত ইতিহাস।
৪. স্তন ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস।
৫.অল্প বয়সে মাসিক শুরু এবং বেশি বয়সে মাসিক শেষ।
৬. বেশি বয়সে সন্তান ধারন বা সন্তান না নেওয়া।
৭. সন্তানকে স্তন পান না করানো।
৮. অতিরিক্ত স্থুলতা, ফাস্ট ফুড গ্রহণ।
৯. অ্যালকোহল সেবন, ধুমপান, Hormone- replacement therapy ইত্যাদি।
#স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ কি কি?
১. স্তনে চাকা বা Lump অনুভব করা, যা ব্যাথাহীন কিন্তু আকারে বেড়ে যাচ্ছে।
২. স্তনের ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তন, যেমন চামড়া কুঁচকে যাওয়া বা কমলার খোসার মত হয়ে যাওয়া।
৩. স্তনের আকারে পরিবর্তন হওয়া।
৪.Nipple বা স্তন বৃন্ত থেকে রস নিঃসরণ বা রক্তপাত হওয়া।
৫.বগলে বা গলার কাছে চাকা অনুভব করা।
৬. স্তনের স্তন বৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া।
৭. স্তনে ঘা দেখা যাওয়া ইত্যাদি।
#স্তন ক্যান্সার কিভাবে নির্নয় করা যায়?
স্তন পরীক্ষার জন্য ম্যামোগ্রাফি, স্তনের আলট্রা সোনোগ্রাফু, MRI, FNAC বা বায়োপসির মাধ্যমে খুব সহজেই স্তন ক্যান্সার নির্নয় করা যায়।
#স্তন ক্যান্সার চিকিৎসা পদ্ধতি কি কি?
ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে Staging এর ওপর। সাধারণত StageI, Stage II কে আমরা Early stage এবং Stage III, Stage IV কে Advance Stage বলি। স্তন ক্যান্সারের প্রচলিত বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি গুলো হল- সার্জারী, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি, Targated থেরাপি এবং Immunotherapy.
#স্তন ক্যান্সার কিভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব?
Early detection is the best prevention; কারন এই রোগটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা যায়, তবে ৯০ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রেই রোগটি নিরাময়যোগ্য। আর সেটি সম্ভব একমাত্র ‘ব্রেষ্ট ক্যান্সার স্ক্রিনিং’ ( Breast cancer screening) এর মাধ্যমে। এই স্ক্রিনিংয়ের একটি অংশ হল Self Breast Examination(SBE) অর্থাৎ নিয়মিত সঠিক পদ্ধতিতে নিজের স্তন নিজেই পরীক্ষা করা। যার সচিত্র রূপরেখা ইন্টারনেটে সহজলভ্য। এছাড়া স্তন ক্যান্সারের বাড়তি কোনো রিস্ক না থাকলে চল্লিশোর্ধ্ব সব মহিলার বছরে অন্তত একবার ম্যামোগ্রাফি করা ব্রেষ্ট স্ক্রিনিংয়েরই অংশ। এছাড়া যাদের অতিরিক্ত কোনো ঝুঁকি আছে, যেমন পরিবারের এক বা একাধিক সদস্যের ব্রেষ্ট বা ওভারি ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং আরও আগেই শুরু করা প্রয়োজন।
এছাড়া স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা, ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা, স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, মহিলাদের স্তন পানে উৎসাহিত করা, ডাক্তারের পরামর্শ মেনে সীমিত হরমোন থেরাপি গ্রহণ ইত্যাদি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম করে।
