News Britant

অদ্ভুতুড়ে ৪

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#কৌশিক চট্টোপাধ্যায়: ভূত বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুন ভূতের গল্প ভালো লাগে না এমন মানুষ পাওয়া খুব দুষ্কর। ঘোর অমাবস্যা অথবা জ্যোত্‍স্না ভেজা পূর্ণিমারাত এই দুটোই কিন্তু ভূতের গল্পের প্রধান উপকরণ। এছাড়া ধরুন শীতের রাতে একটা জনমানব শূন্য রেল স্টেশন, লাস্ট ট্রেন মিস করে যাওয়া একজন বিদেশী লোক, কুকুরের আর্তনাদ, রাতের অন্ধকারে কালো বেড়ালের জুলজুলে চোখ আর কিছু সাউণ্ড এফেক্ট ব্যাস ভূতের আগমনের প্লট একেবারে তৈরি। পৃথিবী ব্যাপি বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের পাশে দাঁড়িয়ে বর্তমানে ভূতকেও প্রতিনিয়ত তার ভয় দেখানোর স্ট্রাটিজিতেও ক্রমাগত পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। ভূতকেও হতে হচ্ছে বিজ্ঞানমনস্ক।কারণ লোহা দিয়েই লোহাকে কাটতে হয়। কিন্তু লোহা নামক ধাতব পদার্থকে নাকি ভূত বাবাজীর আবার ভীষণ ভয়। যাই হোক এসব ক্ষেত্রে বিশ্বাস করে নেওয়াটাই অনেক ভালো। কথায় বলে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। অতএব তর্ক না করাটাই ভালো। বিশ্বাস করে নিলেই যদি সব ল্যাঠা চুকে যায় তাহলে আপনার আমার মতো মধ্যবিত্তের বিশ্বাস করে নেওয়াটাই মনে হয় ভালো। যাই হোক ভূত বিশ্বাস না করলেও এই ভূত চতুর্দশীর রাতটা বিনা ভয়ে কাটিয়ে দেওয়াটা কি খুব একটা ভালো কাজ হবে? তাই আপনাদের জন্য তাই রইলো বিশ্বের চারটি ভৌতিক স্থান এবং ঘটনার হদিশ –

১. আউটসাইড নেটওয়ার্ক কভারেজ: বুলগেরিয়ার একটি মোবাইল নাম্বার নিয়ে একসময় তৈরি হয়েছিলো ভৌতিক আতঙ্ক। জানা যায় 0888 888 888 এই নম্বরটি ব্যবহার করতেন সেই সময়ের মোবিটেল সংস্থার সিইও ভ্লাদিমির গ্রাসনভ। ২০০১ সালে তার মৃত্যুর পরে ঐ নাম্বারটি চলে যায় এক ড্রাগ মাফিয়ার হাতে। শোনাযায় ২০০৩ সালে নেদারল্যান্ডে এক ড্রাগের আখড়া দেখতে গিয়ে মস্কোর কিছু মাফিয়ার হাতে মৃত্যু হয় তার। মারা যাওয়ার সময় তার হাতেই ছিলো প্রিয় মুঠোফোনটি। এরপর নাম্বারটি চলে যায় কনস্তান দিশিলেভ নামে এক কোকেন ব্যবসায়ীর হাতে ২০০৫ সালে তাকেও খুন হয়ে পরে থাকতে দেখা যায় বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ার এক ভারতীয় রেস্তোরাঁর সামনে। তার মুঠোতেও তখন ধরা ছিলো সখের মোবাইল ফোনটি। সেই প্রতিটি ঘটনায় কেবলমাত্র ফোন নাম্বার টাই ছিলো কমন ফ্যাক্টর। পরবর্তীতে ঐ নম্বরটিকে অভিশপ্ত নম্বর হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। ২০০৫ সালে ঐ নাম্বারটিকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো নাকি ঐ নম্বরে ফোন করলে শোনা যায় ‘Presently outside of nework coverage’.

২. ডাউ হিলসের ভিক্টোরিয়া বয়েজ হাই স্কুল: সত্যি ভূতের কাহিনীতে বারবার উঠে এসেছে কার্শিয়ঙের ডাউ হিলস ভিক্টোরিয়া বয়েজ হাই স্কুলের ভূতুড়ে কাহিনী। ঘন কুয়াশায় ঢাকা কার্শিয়ঙের এই পার্বত্য অঞ্চলে নাকি মাথা বিহীন একটি কিশোরকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তাদের কথা অনুযায়ী, স্কুল সংলগ্ন পার্বত্য জঙ্গলে একসময় বেশ কিছু খুনের ঘটনা ঘটেছিলো যার জেরে ঐ এলাকায় অতৃপ্ত আত্মার আনাগোনা আছে বলে মনে করেন বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের কথা অনুযায়ী বেশ কিছু মার্ডারের ঘটনার কারনে ঐ এলাকায় একটা ভৌতিক পরিবেশ তৈরি হয়ে গিয়েছে। স্কুল থেকে জঙ্গলে দিকে চলে যাওয়া রাস্তাটিকে স্থানীয় লোকেরা ডেথ রোড বলে ডাকে। ঐ রাস্তাতেই নাকি একাধিকবার মাথা বিহিন এক কিশোরের অস্তিত্ব টের পেয়েছেন বহু মানুষ। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের পক্ষ থেকে তো এই ভৌতিক ঘটনার আসল কারন খোঁজার চেষ্টাও চালানো হয়েছিলো। স্থানীয় কিছু মানুষের কথা অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস অবধি স্কুল ছুটি থাকে আর সেই সময়ে ঐ স্কুল সংলগ্ন এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় বারবার অস্বাভাবিক অনুভূতি তৈরি হয়েছে তাদের।

কয়েকজন জানিয়েছেন, ঐ এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে কেউ অনুসরণ করছে বলে মনে। আবার কেউ জানিয়েছেন, কুয়াশায় আচ্ছন্ন ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন ঐ জঙ্গল পথদিয়ে চলার সময়ে এক ধুসর চাদর গায়ে দিয়ে এক মহিলাকে ঐ ভূতুড়ে জঙ্গল থেকে বেরহয়ে আসতে দেখেছেন। অনেকে আবার বাচ্চার কান্নার আওয়াজো পেয়েছে গহন বনের মধ্য থেকে। সব মিলিয়ে কার্শিয়ঙের পাহাড়ি ডাউ হিলসের পথে ঘন কুয়াশার মতো চেপে বসে আছে মাথা বিহীন কিশোরের ভূতুড়ে আতঙ্ক।

৩. আশ্চর্য সিনেমাহল: প্যারিসের এক সিনেমা হলে কথা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন। ২০০৪ সাল নাগাদ প্যারিসের একজন পুলিশ অফিসার নাকি আচমকা মাটির তলায় এক সিনেমাহলের হদিস পেয়েছিলেন। একটি গর্তদিয়ে ঐ সিনেমাহলে প্রবেশ করে তো তিনি অবাক। সেখানে নাকি বিদ্যুত সংযোগ রয়েছে।

শুধু তাই নয় বিদ্যুতের পাশাপাশি টেলিফোন সংযোগ এবং মদ্যপানের বার দেখেছেন তিনি। প্রথম অবস্থায় তিনি গোটা ঘটনায় কোন অসাধু মানুষ যুক্ত আছে বলেই মনে করেছিলেন। কিন্তু বাইরে বেড়িয়ে পকেটে হাত দিতেই নাকি অবাক ঘটনা ঘটে। পকেটের মধ্য থেকে বেড়িয়ে আসে একটি ছোট্ট চিঠি আর তাতে লেখা এই সিনেমা হলের অস্তিত্বের কথা তিনি যেনো দ্রুত মন থেকে মুছে ফেলেন। আর কোন দিনো এই সিনেমাহল যেনো খুঁজতে না আসেন।

৪. ভুতুড়ে রাস্তা: ভারতে সমুদ্র সৈকত অঞ্চল গোয়ার ঘটনা এটি। জানাগেছে, বেশ কয়েক বছর আগে গোয়ার ধাভালি থেকে বোরি যাওয়ার পথে বেতাখোল এলাকায় সন্ধ্যা বা রাতের অন্ধকারে আচমকা একটি মহিলা গাড়ির সামনে এসে কাঁদতে থাকে আর গাড়ির ড্রাইভার আচমকা এই ঘটনার জেরে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন দুজন ব্যক্তি। পরবর্তীতে এই ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন নাকি বেশ কয়েকজন গাড়ির চালক এবং আরোহী। তাদের মতে এই এলাকায় গাড়ি একটু স্পিডেই চলাচল করে। হঠাত্‍ এই কান্নার আওয়াজ আর আচমকা গাড়ির সামনে মহিলা আগমনের জেরে বহু দুর্ঘটনা হয়েছে এ অঞ্চলে। সেই থেকে এই ভূতুড়ে রাস্তা রাতের বেলায় অধিকাংশ ড্রাইভার পারতপক্ষে এড়িয়ে চলেন।

News Britant
Author: News Britant

Leave a Comment