



অর্ণব সাহা, ডুয়ার্সঃ ডুয়ার্সের নাম না-জানা অচেনা জায়গাগুলো দু’একবছর হলো প্রচারের আলোয় আসা শুরু করেছে। লুকনো পাহাড়ের খাঁজ, পাহাড়ি ঝোরা, রংবাহারি কত ফুলের পসরায় সাজানো বাগান হলো ঝান্ডি। মালবাজার থেকেই প্রকৃতির নিসর্গে ভরপুর৷ চা-বাগান শুরু হতেই সবুজে চোখ জুড়িয়ে যায়, রাস্তার একপাশে সুন্দর চা-বাগিচা, উল্টোদিকে এক সারিতে ছোট ছোট কোয়ার্টার, যেন কেউ সাজিয়ে রেখেছে যত্ন করে, ভারি সুন্দর লাগে দেখে। নাকে ভেসে আসে চা গাছের গন্ধ। এই কাঁচা গন্ধের এক অদ্ভুত টান।পথে গরুবাথান নামে একটি যায়গা পড়বে। বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে ছোট ছোট বসার জায়গা করে দিয়ে দোকানি পশরা সাজিয়ে বসে আছে, পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে চেল নদী।
এই পাহাড়ি নদী একসময় খুব ভয়ানক আকার ধারণ করত, ভাসিয়ে দিত গোটা অঞ্চল। এখন সেরকম হয় না, তবে শোনা যায় এই নদী অতিরিক্ত জলের ভারে ভাসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে বিস্তীর্ণ এলাকা। গরুবাথান থেকে ঝান্ডির রাস্তা হঠাৎ করে উচ্চতা নিয়ে নেয়। কিছুদূর ওঠার পর বেশ খারাপ রাস্তা, সাবধানে উঠতে হয়। তবে এদিক দিয়ে গাড়ি কমই চলে, অন্য রাস্তা দিয়েই মানুষের আনাগোনা বেশি। দু’ধারের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে একসময় দেখা যায় ঝান্ডি ইকো হাটের গেট স্বাগত জানাচ্ছে। রংবেরঙের পতাকা উড়তে দেখা যায় আকাশে মিশে যাওয়া জায়গা ঘিরে৷ সুন্দরভাবে সাজানো একুশটি কটেজ রয়েছে সেখানে৷
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর ট্যুরিস্ট সেখানে যায়৷ ওপরে ভিউ পয়েন্ট থেকে পাহাড়ে ঘেরা জায়গা আর সঙ্গে বয়ে চলা নদীর আঁকিবুকি দেখে মনটা ভাল হয়ে যায়, মনে হবে যেনো আকাশ ছুঁয়ে আছেন। একেবারে বাঙালি খাবার পাবেন সেখানে৷ গরম গরম সাদা ভাত, আলু ভাজি, পাঁচমিশালি তরকারি, চিকেন আর স্যালাড, আচার ইত্যাদি। জানলা দিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। সপরিবার ঘুরে যাওয়ার জন্য ঝান্ডি ইকো হাট এককথায় অনবদ্য।
কীভাবে যাবেন : এন. জে. পি. থেকে সেবক, ওদলাবাড়ি, গরুবাথান হয়ে লাভা হয়ে যাওয়ার রাস্তাই ঝান্ডি যাওয়ার জন্য আদর্শ। সময় লাগে আড়াই ঘণ্টার মতো। আর একটি রাস্তা আছে, যেটা মালবাজারের ওপর দিয়ে যেতে হয়, তাতে গাড়ি কম থাকে কিন্তু শেষের দিকে রাস্তার অবস্থা একটু খারাপ।
কোথায় থাকবেন : ঝান্ডি ইকো হাট। ঘরভাড়া ১,২০০-৪,০০০ টাকার মধ্যে।
কী খাবেন : স্থানীয় মোমো, থুকপা, তাজা সবজির তরকারি।
কখন যাবেন : জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস সবচেয়ে ভাল ঝান্ডি ঘোরার জন্য।
