



#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ আবারও সফলতার পালক জুড়ল রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকুটে। এবার CIMPA এর ফেলোশিপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে রাজ্য থেকে প্রথম ‘লরেট’ হিসেবে তিন মাসের জন্য স্পেনের বার্সেলোনা CRM এ গিয়ে গবেষণার সুযোগ পেলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্ক বিভাগের অধ্যাপক ডঃ রিপন সাহা। তাঁর এই সাফল্যে আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের শ্রীবৃদ্ধি হবে বলে বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
এদিন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ডঃ দুর্লভ সরকার জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা এক বিরাট মাপের সফলতা। এর আগেও নানান বিষয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বজগতে ছাপ রাখলেও, এবারের এই আন্তর্জাতিক সফলতা আগামী দিনে আমাদেরকে নতুন পথের সূচনা করবে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের অধ্যাপক ডঃ রিপন সাহা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করে B.Sc করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর মাষ্টার্সে IIT, কানপুরে পড়াশোনা করলেও গবেষণার জন্য আবারও ফিরে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বাবা গৌতম সাহা, মা ববিতা সাহা আক্ষরিক অর্থে স্কুলের গন্ডী পার হন নি। সেরকম পরিবার থেকে শুধু নিজের অধ্যাবসায় এবং প্রফেসর গৌতম মুখোপাধ্যায় ও প্রফেসর প্রতুলানন্দ দাসের অনুপ্রেরণায় এই সাফল্য এল বলে জানালেন প্রাণখোলা অধ্যাপক ডঃ সাহা। তিনি বলেন, ‘আমার গবেষণার বিষয় ছিল Algebric topology। গবেষণা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরিতে জয়েন করলেও ফ্রান্সের CIMPA (সেন্টার ফর পিওর এন্ড এপ্লায়েড ম্যাথামেটিকস) এর মত প্রতিষ্ঠান থেকে ফেলোশিপ নিয়ে, সেখানে স্ব শরীরে উপস্থিত থেকে ৩০/৪০ টি দেশের তাবড় অঙ্ক বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সাথে নিজের অভিজ্ঞতা ও মত বিনিময় করব, এটা ভেবেই বেশ ভালো লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ২০১১ সালে CIMPA তাদের ফেলোশিপের জন্য বিশ্ব জুড়ে বিজ্ঞাপন দেয়। আমিও সেই বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বিশ্বের দুজন এই ফেলোশিপের জন্য মনোনীত হয়। ভারত থেকে আমি এবং ব্রাজিল থেকে আরও এক অঙ্কবিদ। এই সুযোগের প্রথম অংশ বিগত ২০২১ সালে করোনা আবহে অনলাইনে সংঘটিত হয়। পরের অংশ এবছর, তাই আগামী জুন মাসে আমাকে স্পেনের বার্সেলোনাতে পৌঁছাতে হবে এবং Follow up on Higher Homotopical structure বিষয় নিয়ে সেখানকার CRM পরিদর্শন এবং গবেষণার সুযোগ পাব।
এরকম একটা প্রেস্টিজিয়াস ফেলোশিপ পেয়ে আমি খুব খুশী ও আনন্দিত। এই যোগাযোগের ফলে আগামী দিনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণার সুযোগ পাবে। এরকম সম্মান কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।’ উল্লেখ্য, ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের ফেলোশিপ পাওয়া ডঃ সাহা এর আগেও ইটালী ও উজবেকিস্তানের মত দেশে গবেষণা ও পরিদর্শন করেছেন। অধ্যাপক সাহার সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তাঁর স্ত্রী অমৃতা সিংহ সাহা এবং মেয়ে আত্রেয়ী সাহা।
