



#মালবাজার: গত রং- খেলার দিনের ঘটনা, ডুয়ার্সের মালবাজার শহর সহ আশেপাশের এলাকায় চলেছে মহানন্দে দোল উৎসব ও রংয়ের খেলা। বেলা গড়াতেই রং ধুয়ে সাফ করার পালা। সেই সাফ করতে গিয়ে হয়েছে বিপত্তি। মালবাজার শহর সহ আশেপাশে অনেক বাড়ি কুয়োর জল গেছে শুখিয়ে।
পৌরসভা ও পিএইচ ইর টাইম কলের জল যেটুকু সকালে এসেছিল তা ধরে রাখা হয়েছে রান্না ও অন্যান্য কাজের জন্য। রং ধুয়ে সাফ করার মতো দেদার জল কোথায় পাবে? অনেকে বাইক, সাইকেল নিয়ে ছুটেছে মালনদীতে। সেখানেও দেখা গেছে জল প্রায় নেই। শুধু ধু ধু বালি আর পাথর। এই ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে পরিবেশ প্রেমী থেকে সাধারণ মানুষকে।
এবার দেখা গেছে, ফাল্গুন মাস পড়তেই ডুয়ার্সের মালবাজার শহর ও আশেপাশের এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ জলের স্তর অনেকটাই নেমে গেছে। শুখিয়ে গেছে কুয়োর জল। পাম্পের সাহায্যে ছাদের উপর ট্যাংকে জল উঠছে না। ভরসা বলতে সরকারি পাইপ লাইনের জল। গত কয়েক বছর ধরে এই প্রবনতা চলছে। কেন এমন জল সংকট?
এর উত্তরে ডুয়ার্সের পরিবেশ প্রেমীরা জানিয়েছেন, “ডুয়ার্সের চা বাগান, গ্রাম ও শহর গুলির আশপাশ দিয়ে বয়ে গেছে বিভিন্ন নদী ও ঝোড়া। স্থানীয় জনপদের ভূ-গর্ভস্থ জলের উৎস এই নদী ও ঝোড়া। মালবাজার শহরের পিএইচইর জলের মুল উৎস মালনদীর ভূগর্ভস্থ জল।
এই নদী ও ঝোড়ার উজানে নদী বক্ষে জেসিবি মেসিন দিয়ে গর্ত খুড়ে হাওদা বানিয়ে জল আটকে চা বাগান গুলিতে শুখার মরসুমে জল সেচ করা হচ্ছে। মাল নদীর উজানে জাহাজ বস্তি এলাকায় বাধ দিয়ে পুকুরের মতো বানিয়ে পাম্পের সাহায্যে জল তুলে নেওয়া হচ্ছে।
ফলে নদীর নিচের অববাহিকায় জলের স্তর মারাত্মক ভাবে নেমে যাচ্ছে। সৃষ্ঠি হয়েছে জল সংকট। ডায়না, নেওরা সহ বেশ কয়েকটি নদীর উজানে এইভাবে জল সংগ্রহের দৃশ্য দেখা যায়। শুধু নদীর উজানে নয়, ডামডিম থেকে ওদলাবাড়ি যেতে জাতীয় সরকের পাসে কয়েকটি ঝোড়াতে এই ঘটনা নজরে পড়বে।
এভাবে নদী ঝোড়া আটকে জল তুলে নেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার ওদলাবাড়ির পরিবেশ প্রেমী নফসর আলি। তিনি বলেন, এভাবে নদী ঝোড়া আটকে জলসেচ অবৈধ। এভাবে নদীর উজানে নদী আটকে জল তুলে নিলে নিম্ন এলাকায় জলের সংকট হবে এটাই বাস্তব।
একটা সময় চাবাগান গুলি কুয়ো খুড়ে পাম্পের সাহায্যে জল সেচ করতো।বর্তমানে আবাদি এলাকা বেড়েছে। জলের চাহিদা মেটাতে এই ব্যবস্থা নিয়েছে। এর নিম্ন অববাহিকায় জলের সমস্যা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে গবাদিপশু ও বনাঞ্চলের পশুপাখি দের পানীয়জলের সমস্যা হয়েছে। আমরা বহুবার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি।
কিন্তু, ব্যবস্থা হয়নি। ভুমি রাজস্ব দপ্তর ও সেচ দপ্তরের বিষয়টি দেখা উচিত। এনিয়ে মাল এলাকার সেচ দপ্তরের এক বাস্তুকার বলেন, এভাবে নদী আটকে জল সেচ বে আইনি। সেরকম অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ হলে অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
