



#মালবাজার: গানের কলি কিম্বা কবিতার ছন্দে আছে “পাহাড় ডাকে আয়রে”। একথা সত্যি পাহাড়ের সুমহান গম্ভীর এড়ানো যায় না। তাই বার বার সমতলের মানুষ পাহাড়ের আহ্বানে চলে আসে। কেউ ঘুরতে আসেন কেউ আবার পর্বতারোহণের জন্য ছুটে যান পাহাড়ের চূড়ায়।
সমতলের নাগরিক জীবনের ব্যাস্ততা ও ঘিঞ্চি পরিবেশ থেকে কিছু সময়ের জন্য শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে কয়েক দিন কাটিয়ে আসতে অনেকেই চলে আসেন পাহাড়ি পরিবেশে। পাহাড়ে একদিকে যেমন ঠান্ডা পরিবেশ তেমন পরিস্কার আবহাওয়া মন ও শরীরকে চাঙ্গা করে। যারা পাহাড়ে ঘুরতে ভালো বাসেন তাদের জন্য সুন্দর এক পাহাড়ি গ্রাম “ডারাগাও” গন্তব্য হতে পারে।
সমুদ্রতল থেকে ৪২৫০ উচুতে রয়েছে ডারাগাও। এখনে এলে দেখতে পাবেন দুদিকে রয়েছে উচু পাহাড় মাঝখান দিয়ে বয়ে চলছে চেল নদী। অনেক দূরে পাহাড় থেকে নেমে চেল নদী সমতলে এসেছে। সেই দৃশ্য দেখা যাবে। আকাশ পরিস্কার থাকলে রাতে বহু দুরের সমতলের শহরের আলোক রোশনাই দেখা যাবে।
এই মাঝ চৈত্রে শিলিগুড়ি বা মালবাজার শহরে তাপমাত্রা যেখানে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস সেখানে ডারাগাওয়ে পারদ স্তম্ভের উচ্চতা ২৩ ডিগ্রিতে থেকে যায়। মাঝে মাঝে মেঘের আনাগোনা শরীর ছুয়ে যায়। শীতের মরসুমে সন্ধ্যায় কুয়াশা ঢেকে যায় আশেপাশের পরিবেশ।
হোম স্টের ব্যালকনিতে বসে বর্ষার অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে পাবেন। নজরে আসবে আশেপাশের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঝর্না। শোনা যাবে বহু নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া চেল নদীর কলতান। শীতে পাহাড়ি ঝর্নার দেখা না পাওয়া গেলেও কুয়াশার চাদরে ঢাকা আঁধো অন্ধকারে এক অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
কপাল ভালো থাকলে বর্ষার ঘনঘটার মাঝে দেখতে পাবেন মেঘ ভাঙা বৃষ্টি। ট্যুর অপারেটর ও পর্যটন ব্যবসায়ী রাজেন প্রধান জানালেন, ওই দুই উচু পাহাড়ের মাঝ দিয়ে নেমে আসে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি। গত লক্ষী পুজার দিন এরকম দৃশ্য দেখা গিয়েছিল’।
এহেন সুন্দর নৈসর্গিক পরিবেশে যাবেন কিভাবে?
নিউজলপাইগুড়ি জংশনে নেমে বাসে বা গাড়ি ধরে গরুবাথান যাওয়া যায়। ভাড়া গাড়িতেও যাওয়া যায়।দুরত্ব মাত্র ৮৪ কিমি। ডামডিম, গরুবাথান হয়ে যেতে হবে। এছাড়া কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে নিউমাল জংশনে নেমে ভাড়া গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। দুরত্ব মাত্র ৩৭ কিমি।গরুবাথান, পাপরক্ষৈতি হয়ে লাভা, লোলেগাওয়ের খানিকটা আগে বাঁ দিকে পাহাড়ের উঠে গেলেই পাওয়া যাবে ডাড়াগাও।
রয়েছে সুন্দর হোম স্টে। ভাড়া নাগালের মধ্যে। ১৫০০- ২০০০ টাকা। পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর। এখন সমতল এলাকায় বৃষ্ঠি নেই। গরমে হাঁসপাঁশ করছেন। এই গরমে ঘুরে আসুন ডাড়াগাও। প্রত্যক্ষ করুন প্রতিদিনের অঝোর বৃষ্টি। শহরের হইচইপূর্ণ জনজীবন খনিকের শান্তি পেতে চলুন ঘুরে আসি ডারাগাও।
