



#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার তমব্রু সীমান্তে দুটি মর্টার শেল ছোড়ার ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সোমবার বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে সোমবার আমরা ডেকেছি। তাকে নোট ভার্বাল দেয়ার মাধ্যমে আমরা করা প্রতিবাদ জানিয়েছি। যে ঘটনা ঘটেছে তা যেন আর না ঘটে এবং যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমরা তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছি।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গত রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু বাজার এলাকায় মর্টার শেল দুটি পড়ে। সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। বাংলাদেশের সীমান্তে অবিস্ফোরিত মর্টার শেল পড়ার বিষয়টি দুর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনাবশত হওয়ায় মিয়ানমারকে সতর্ক করা হয়েছে। এর আগেও সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেল পড়েছিল। তখনো প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল।
এর আগে গত রোববার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে দুটি মর্টার শেল ছোড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মর্টার শেল পড়ার বিষয়টি দুর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। দুর্ঘটনাবশত হলে মিয়ানমারকে সতর্ক করা হবে। এর আগেও সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেল পড়েছিল। তখনো প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল।’ গত রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার এলাকায় দুটি মর্টার শেল নিক্ষেপ করে। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তবে স্থানীয় প্রশাসন ও ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দারা জানান, সপ্তাহ দুয়েকের বেশি সময় ধরে সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। গতকাল সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। দুপুরে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান চক্কর দিতে দেখা যায়। এরপর বিকেলে বাংলাদেশের সীমান্তের মধ্যে মর্টার শেল পড়ার ঘটনা ঘটে।
নাইক্ষংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেছেন, গত রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে উত্তর পাড়ার কাছাকাছি, সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে আধা কিলোমিটার ভেতরে মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানিয়েছিলাম। গত কয়েকদিন ধরেই ওই সীমান্তে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলি চলছে। এর আগেও কয়েকটি মর্টার শেল সীমান্তের কাছাকাছি পড়েছে। তবে এবার এই দুটি শেল বাংলাদেশের ভেতরে লোকালয়ে পড়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলি চলছে। এলাকার লোকজনের কাছ থেকে জেনেছি, সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আর (বিদ্রোহী) আরাকান বাহিনীর মধ্যে ফাইট হচ্ছে। গত রোববার উত্তরপাড়ার কাছাকাছি মর্টার শেল এসে পড়েছে। মর্টার শেল পড়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ পারে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। শূন্যরেখার দিকে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ জন সদস্য রয়েছেন। গোলাগুলির শব্দে তাঁরা বেশি আতঙ্কে রয়েছেন।
