



#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ করোনা আবহে দীর্ঘ ২ বছর ধরে রাজ্যে মাতৃ আরাধনা হয়েছে খানিকটা জৌলুশ হীন ভাবে। এবছরের পুজো শুরু হতে আর বাকি রয়েছে ৩০ দিন। নিউ নর্মালে এবছর পুজোর থিম থেকে, প্যান্ডেল, প্রতিমা প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এবছর বড় প্রতিমার চাহিদা থাকলেও, মন খারাপ রায়গঞ্জ শহরের কুমোরটুলি হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপল্লীর কুমোর পাড়ায়।
তাদের দাবি, নতুন প্রজন্ম প্রতিমা শিল্পী হিসেবে কাজ করতে না চাওয়ায়, আগামী দিনে ধংস হয়ে যেতে পারে এ-শহরের কুমোরটুলি হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপল্লী। প্রবীণ প্রতিমা শিল্পী নারায়ন পাল এবছরে ৮ টি দুর্গা প্রতিমার কাজ হাতে নিয়েছেন। তিনি বলেন, এবছর বড় পুজো করার ইচ্ছে নিয়ে প্রতিমা বায়না করতে আসছেন বহু পুজো কমিটির সদস্যরা। তারা বড় ও ভালো মানের প্রতিমা চাইছেন।
কিন্তু নতুন প্রতিমা প্রস্তুত করার সময় ও শিল্পী, দুটোরই অভাব রয়েছে আমাদের পাল পাড়ায়। তাই আমাদের পাল পাড়ার মৃৎশিল্পের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। একই বক্তব্য গোবিন্দ পালেরও। ভোর ৫টা থেকে রাত ১১টা, ১২টা পর্য়ন্ত একনাগাড়ে তিনিও পরিশ্রম করে দুর্গা, শিব, গনেশ, মনসা, বিশ্বকর্মা বানিয়ে চলেছেন। তার দাবি, এত কাজ, কিন্তু উপযুক্ত মৃৎশিল্পী নেই আমাদের এখানে।তাই বাধ্য হয়ে শিলিগুড়ি বা কোলকাতা থেকে শিল্পী এনে প্রতিমা বানাতে হয়। এতে খরচ বাড়ে, পাশাপাশি উপার্জন কমে যায়।
কেন নতুন শিল্পী তৈরি হচ্ছে না, কেন নতুন প্রজন্ম মৃৎশিল্পে আগ্রহ হারাচ্ছে, জানতে চাইলে প্রবীন শিল্পী ভানু পাল বলেন, শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা চাকুরী সূত্রে বাইরে থাকছে। আর বাকিরা পরিশ্রম বেশি, অথচ উপার্জন কম হওয়ায়, অন্য পেশাকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের শিল্পী বাবন পাল, তিনি প্রতিমার গায়ে মাটির প্রলেপ লাগাতে লাগাতে বলে, ‘আসলে এই মৃৎশিল্পে সারাবছর এক নাগাড়ে বিরতিহীনভাবে পরিশ্রম করতে হয়।
পাশাপাশি সমস্ত জিনিসপত্রের দাম উর্ধ মূখী হওয়ায় রোজগার ভীষণ কম। তাই বিকল্প কর্মসংস্থানে সকলে মনোযোগী হচ্ছে। এর ফলে আগামী দিনে এই শিল্প ধংস হয়ে যেতে পারে।এই কারনেই কি রায়গঞ্জ শহরের বাইরে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রতিমা শিল্পের সাথে যুক্ত হচ্ছেন, উঠছে প্রশ্ন।
