



#ইসলামপুর: গঙ্গোত্রী থেকে শুরু করে মানস সরোবর পর্যন্ত আঠারোটি উৎসের জল দিয়ে স্নান করানো হয় দুর্গাকে। রামচন্দ্রের অকাল বোধনের নিয়মে প্রাচীন রীতি মেনে বনেদি বাড়ির এই পুজো দেখতে আমন্ত্রিত হয়ে এখনও ছুটে আসতেন বাংলাদেশের খলিল মিঞা ও খালেক মিঞারা। এবার আসছেন ওপার বাংলা থেকে লুৎফর রহমান।
এর জেরেই পারিবারিক এই পুজো এখন সম্প্রীতির উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার কাছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের রামকৃষ্ণপল্লিতে এই পুজোকে ঘিরে উৎসাহ ও উদ্দীপনায় মেতে ওঠে ইসলামপুরবাসী। আর পাঁচটা পারিবারিক পুজোর থেকে নন্দী বাড়ির পুজো একটু আলাদা। বোধনের আগেই বিসর্জন হওয়াটাই রীতি এখানে।
প্রতিবছর ষষ্ঠীর দিন মায়ের পুরোনো মূর্তি বিসর্জন দিয়ে ওই বেদিতে প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন মূর্তি। বেদী খালি না রাখাটাই নিয়ম নন্দী বাড়ির পুজোয়। ষাটের দশক পর্যন্ত বাংলাদেশের ঢাকা জেলার সিরাজদিখান এলাকায় এই পুজো সার্বজনীন হিসেবেই ছিল। এরপর ষাটের দশকে নন্দী বাড়ির বর্ষীয়ান সদস্য মাধব নন্দী এই পুজোকে নিয়ে আসেন ইসলামপুরে।
এখানে এসে সেটি পারিবারিক পুজো হিসেবেই স্বীকৃতি পায়।দেশ ছাড়ার সময় এই পুজোর দায়িত্ব নেবার মতো তেমন কেউ না থাকায় মাধব নন্দীকেই সেটি নিয়ে আসতে হয় বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। নন্দী পরিবারের সদস্য সুদেব নন্দী জানান ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এলেও বাংলাদেশের মৃৎ শিল্পী গোপাল চন্দ্র পাল এবং পরবর্তিতে তার ছেলে মনীন্দ্র পাল তৈরি করেন সুবিশাল এক চালার প্রতিমা।
ষষ্ঠীর দিন বিভিন্ন উৎস ও নদী থেকে সংগৃহীত আঠারো রকমের জল দিয়ে দেবী দুর্গাকে স্নান করানোটাই রীতি ওই পরিবারের। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে প্রাচীন পদ্ধতি, রীতি ও রেওয়াজ মেনে পুজো হওয়ায় ওই পুজোতে বিশেষ করে অঞ্জলীর দিন এলাকার বাসিন্দাদের ভিড় যেন উপচে পরে। প্রতিবছরই বাংলাদেশের দুই ঢাকি পরশুরাম দাস ও সুশীল দাসদের ঢাকের আওয়াজে এলাকা যেন মুখরিত হয়ে ওঠে। পুজোর কটা দিন মানুষের ভিড় সামাল দিতে রীতিমতো নাজেহাল হতে হয় নন্দী বাড়ির সদস্যদের।
