News Britant

রায় বাড়ির ১২৩ বছরের দুর্গাপূজা আজ সার্বজনীন হয়ে উঠেছে

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#মালবাজার: মালবাজার শহরের দক্ষিণে রয়েছে তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েত। গোটা এলাকার পুব দিয়ে বয়ে গেছে মালনদী ও পশ্চিম দিয়ে বয়ে গেছে কুমলাই নদী। দুই নদীর দোয়াব অঞ্চলে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ। গ্রাম পঞ্চায়েতের পুর্ব দিকে মালনদীর ধারে রয়েছে রায় বাড়ি। কয়েক পুরুষ ধরে বসবাসের জন্য গোটা পরিবার এলাকায় পরিচিত। এখন ওই এলাকার নাম রায় পাড়া।

সেই রায় বাড়ির ১২৩ বছরের দুর্গাপূজা আজ পাড়ার পুজা হয়ে গেছে। তখন গত শতাব্দী সবে শুরু হয়েছে। ডুয়ার্সের জনপদ বলতে কিছুই ছিল না।সবে মাত্র জঙ্গল কেটে চা বাগানের পত্তন শুরু হয়েছে। সেই সাথে রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে ডুয়ার্সের এদিকওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মেচ ও রাজবংশী সম্প্রদায়ের গ্রাম ছাড়া আর সেরকম জনবসতি ছিল না।

এইরকম এক সময়ে ১৯০০ সালে লাটাগুড়ি এলাকায় এক অবস্থাপন্ন রাজবংশী পরিবারের কর্তা বৃকদর দাস রায় ও তার স্ত্রী বিন্দেশ্বরী দাস নিজের বাড়িতে দুর্গাপূজা শুরু করেন। বেশকিছু বছর লাটাগুড়ি এলাকায় তাদের সারম্বরে পুজা হয়। এরপর এই পরিবার চলে আসে তেশিমলা এলাকায় এবং মাল নদীর ধারে  বসতি স্থাপন করে। স্থান পরিবর্তন করলেও বাৎসরিক দুর্গাপূজায় ভাটা পড়েনি।

প্রতিবছর নিয়ম করেই পুজা হয়ে আসছে। সাবেক একচালাতেই দেবীর পুজা হয়। পারিবারিক নিয়ম অনুযায়ী ধূপগুড়ি থেকে আসেন অসামীয়া ব্রাহ্মণ পুরোহিত। নিয়ম করে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজা হয়। পুজার মধ্যে থাকে নানান অনুষ্ঠান। চলে প্রসাদ বিতরণ। রায় পরিবারের চতুর্থ পুরুষের বর্তমান মধুসূদন দাস রায় জানান, এবার পুজার ১২৩ বছর হবে। পারিবারিক নিয়ম মতো একচালা প্রতিমাতে পূজা হবে। বাড়ির মন্দিরে কাঠামো পুজা হয়েছে।ষষ্ঠী থেকেই পুজা হবে”। 

জানাগেল, ডুয়ার্সের অন্যতম এই পুরানো পারিবারিক পুজা বর্তমানে আর পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আশেপাশে আর কোন পুজার আয়োজন না থাকায় গ্রামের মানুষ এই পুজাতে ভীড় করে। সবাই মিলে পুজার ব্যবস্থা করে। এখন আর রায় বাড়ির পুজা নয়, রায় পাড়ার সার্বজনীন পুজায় পরিনত হয়েছে ।কিন্তু, মন্ডব ও পুজার নিয়ম এক রয়ে গেছে।  আশেপাশের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষরা এই পুজাতে আসে। প্রত্যন্ত এই গ্রামে পুজার কয়দিন স্থানীয়রা সবাই আনন্দে মেতে ওঠে।

বর্তমান প্রজন্মের আর এক ভাই গুরুদাস রায় জানান, এবার আমরা সরকারি ৬০ হাজার টাকা পেয়েছি। সেই টাকা সাবেক মন্দিরের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। পুজার আগেই শেষ হবে।আগামী দিনে যাতে সবাই মিলে পুজা করতে পারে তার জন্য এই উদ্যোগ।

Leave a Comment