News Britant

ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশের আখাউড়া হয়ে ট্রেন আসবে আগরতলা

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ে এবার বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতা থেকে যাত্রী ও পণ্য নিয়ে রেল যাবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে। পাশাপাশি ভারত ‍ও বাংলাদেশের মধ্যকার নিবিড় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে উভয় সরকার। এছাড়া প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে রেলযোগাযোগ বাড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলা পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রক।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে কলকাতা থেকে ট্রেন আখাউড়া হয়ে আগরতলা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। বাংলাদেশের স্থলপথ সীমান্ত ‘আখাউড়া এবং ত্রিপুরার আগরতলা সীমান্ত অবধি ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৬ সালেই গ্রহণ করা হয়েছিল; যা বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার কথা ছিল ২০১৮ সালে। পরে দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন শেষ করার কথা জানানো হয়। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রস্তাব করে রেলপথ মন্ত্রক।

মেয়াদ বাড়িয়ে রেলপথ মন্ত্রকের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদনও পেয়েছে। নতুন প্রস্তাবে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। নতুন প্রস্তাবে আগামী ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, রেলপথ মন্ত্রকের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন রয়েছে ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। প্রকল্পে বাকি অর্থায়ন প্রকল্প সহায়তা বাবদ ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট থেকে পাওয়া যাবে। যার পরিমাণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে রেলপথ মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের আখাউড়া হয়ে ভারতের কলকাতা ও আগরতলার মধ্যে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন হবে।

এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং রফতানি নির্ভর ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন হবে। কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ অংশে ১০ কিলোমিটারের বেশি ডুয়েলগেজ মেইন লাইন এবং ৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লুপলাইন নির্মাণ করা হবে। এর জন্য ৫৬ দশমিক ৫১ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনটি মেজর ব্রিজ ও ২০টি মাইনর ব্রিজ নির্মাণ এবং তিনটি স্টেশনে কম্পিউটারাইজড ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) তারকা চিহ্নসহ প্রকল্পটির অনুকূলে মোট ১০৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত ছিল।একনেকে উপস্থাপনের ফাইলে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।

এমন পরিস্থিতিতে রেলপথ মন্ত্রকের প্রস্তাব, আইএমইডি ও ইআরডি’র মতামত বা সুপারিশ বা সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ)’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে একনেক-এ অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

Leave a Comment