



#চোপড়া: বুধবার সকাল থেকে তিন দিনব্যাপী শুরু হচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের তথা উত্তরবঙ্গের শতাব্দী প্রাচীন অষ্টমী দূর্গা পূজার জহরা মেলা। এই মেলা এবার ১৩৫ তম বর্ষে পা রেখেছে। প্রতি বছর শারদীয়া দুর্গা পূজার দশমীর আট দিন পর এই মেলা বসে অষ্টমী দূর্গা পূজা উপলক্ষে।
পূর্ব পরম্পরা মেনে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া থানার মাঝিয়ালী অঞ্চলের নন্দ কিশোর গছ গ্রামে পুরনো স্থায়ী মন্দিরে সিংহবাহিনী মা দুর্গা পূজিতা হন শারদীয়া দুর্গাপূজার দশমীর আটদিন পর। এই দুর্গাপূজা একেবারে ভিন্নভাবে ভিন্ন রূপে পূজিত হন জহরা দেবী হিসেবে। পূজা কমিটির সম্পাদক ধন লালপাল এবং মেলা কমিটির সম্পাদক অজয় পাল জানান, পূর্ব পরম্পরা মেনে এখানে দুর্গা মায়ের পূজা করা হয।
শারদীয়ার মত এখানে চার দিন ব্যাপী পুজো হয় না। প্রতিমার গঠন শ্রেণী ও ভিন্ন ধরনের। কারণ সিংহ বাহিনী দুর্গার সাথে কার্তিক গণেশ লক্ষ্মী সরস্বতী ছাড়াও এখানে মোট ২৮ টি প্রতিমা থাকে। যেমন শিব নারদ লক্ষীনারয়ণ গঙ্গা কামদেব ডাকিনী যোগিনী ইত্যাদি। পুজো হয় একদিনেই। লক্ষ্মী পূজার একদিন পরে মঙ্গলবার রাত্রে পূজা সম্পন্ন হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় মেলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে অতীতে নন্দ কিশোর গছ গ্রামের জহরা পাল নামের এক ব্যক্তি স্বপ্নাদেশ পেয়ে শারদীয়া দুর্গা পূজার ৮ দিন পর অকাল দুর্গাপূজা করেন। সকালে দুর্গাপূজা দেখে শুরু হয় মেলা। তাই ওই ব্যক্তির নাম অনুসারে এই মেলার নামকরণ হয় জহরা মেলা। এই মেলায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে যেমন দোকানদাররা আসেন তাদের নিজ নিজ পসরা নিয়ে, তেমনি এই মেলা দেখতে আসেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও প্রতিবেশী বিহার রাজ্য এবং নেপাল থেকেও। পূর্বে ওপার বাংলা থেকেও আসতো প্রচুর মেলা যাত্রী।
এই মেলার ভৌগলিক অবস্থান উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থেকে শিলিগুড়িগামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের কালা গছ মোড় থেকে দেবী ঝরা রুটের কাঁচাকালি হাট হয়ে পূর্ব দিকে প্রায় ছয় কিমি গিয়ে সবুজ চা বাগানের মাঝে বিশাল মেলা, যে মেলায় একবার গেলে বার বার যাওয়ার ইচ্ছে করবে সবুজের টানে।
