



#মালবাজার: মহা দশমীর সন্ধ্যায় মাল নদীর বিসর্জন ঘাটে হড়পা বানে ভাসান বিপর্যয় স্মৃতি যেন এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়। ঘটনার পর নদী এলাকা ব্যবহার নিয়ে সর্বত্রই কড়া নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সরাসরি নদীতে ছট পুজো আয়োজনে সুরক্ষার জন্য রয়েছে নানা বিধি নিষেধ আছে। এবার বিধি-নিষেধ মেনেই মাল শহরের ছট পুজো কমিটি গুলি পুজো আয়োজন করছে। কোমর বেঁধে জোরদার ভাবেই পুজো আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। হড়পা বান ঘটে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মাল নদীর ছট ঘাট গুলির দিকে বাড়তি নজর রয়েছে প্রশাসন সহ সমস্ত মহলের।
মাল শহরের পূর্ব প্রান্তের মাল নদীতে তিনটি ছট ঘাট রয়েছে। অন্যদিকে, শহরের পশ্চিম দিকের শঙ্খিনী ঝোড়ার ধারেও দুটি ছট ঘাট আছে। সর্বত্রই ছট পুজো নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। মাল নদীর ছট ঘাট গুলোর দিকে এবার প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলেরই বাড়তি নজর রয়েছে। ক্ষুদিরাম পল্লী এলাকায় শিববাড়ি মহাবীর স্থান ছট পুজো কমিটির উদ্যোগে ছট পুজো হয়। কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা রমেশ গিরি বলেন আমাদের নদী ঘাটে ১২০ টি পরিবার ছট পুজো করবে। আমরা নদীর ঘাট সাজানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ঘাট তৈরি হয়ে যাবে।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে মসলাপট্টি ছট পুজো কমিটির তত্ত্বাবধানে ছট পুজো হয়। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অজয় লোহার বলেন, এখানে ১৬০ টি পরিবারের সদস্যরা সরাসরি ছট পুজো করবেন। বিগত বছরগুলিতে যে পথ দিয়ে ছট ঘাটে যাতায়াত চলতো সেই পথটি সংকীর্ণ। নালার সমস্যাও রয়েছে। তাই ছটঘাটে যাওয়ার জন্য নতুন করে রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। অজয় বাবু বলেন বাজার রোড থেকে শুরু করে ছট ঘাটে আসার প্রধান রাস্তাটিরও দশা ভালো ছিল না। পুরো সভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তিন মাসের মধ্যে পিচ ঢালাই রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে।
আমরা আপাতত শ্রদ্ধালু দের চলাচলের জন্য রাস্তায় বালি ফেলে ব্যবস্থা করছি। দুই নম্বর ওয়ার্ডের মহাকালপাড়া এলাকার মাল নদীর ঘাটটিই শহরের মধ্যে বৃহত্তম। বিহারী বিকাশ সমিতির তত্ত্বাবধানে সুলভ চেতন পঞ্চ রতন সমিতি উদ্যোগেই ছট পুজো হয়। বর্তমানে আয়োজক কর্মকর্তারা দারুন ব্যস্ত। মালবাজারের বিহারী বিকাশ সমিতির সভাপতি ধর্মেন্দ্র মিশ্র বলেন আমরা প্রশাসনিক নির্দেশ অনুসরণ করছি। মাল নদীর মূল জলস্রোত থেকে প্রায় পঞ্চাশ মিটারের বেশি দূরত্বে পুজো আয়োজন করছি। নদীর একটি সংকীর্ণ খালের দুধারেই পুজো হবে সরাসরি যারা পূজো করবেন তারাই সেই খালে পুজো দিতে নামবেন।
দর্শনার্থীরা ব্যারিকেডের বাইরে থেকে ছট পুজোর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আমরা সমস্ত মহলের সহযোগিতা চেয়েছি। আমাদের ঘাটে আটটি বিদ্যুতের উঁচু অস্থায়ী বাতিস্তম্ভ থাকছে ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। মহাকাল পাড়া ঘাটে ভারতীয় সমাজসেবা সংস্থার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধালুদের চা পানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা হর্ষিত প্রসাদ। এদিকে, ছট পুজো আয়োজকদের সূত্রেই জানা গেছে ২৮ শে অক্টোবর ছট পুজোকে কেন্দ্র করে নাহান খান হবে ।কলস যাত্রাও বের হবে। ২৯ শে অক্টোবর খারনা হবে। ৩০ শে অক্টোবর অস্তগামী সূর্যকে সন্ধ্যা অর্ঘ্য নিবেদন করা হবে। ৩১ শে অক্টোবর পারন অর্থাৎ উদীয়মান সূর্যকে পুজো করা হবে।
এরপর পারন অর্থাৎ প্রসাদ গ্রহণ হবে। মাল শহরের পশ্চিম প্রান্তে বয়ে চলা শঙ্খিনি ঝোড়ার ধারেও দুটো ছটঘাট রয়েছে। পাশে রাজা চা বাগান আছে। পানোয়ার বস্তি ছট পুজো কমিটির ধর্মেন্দ্র শা বলেন আমাদের এখানে ১৬০ টি পরিবার সরাসরি ছট পুজোতে অংশ নেবেন। আমাদের ছট ঘাট তৈরির কাজ পূর্ণাঙ্গভাবে এখনও শেষ হয়নি কাজ চলছে। অন্যদিকে ,শঙ্খিনী ঝোড়ার ধারেই ছট পুজো করে সূর্যসেন কলোনি ছট পুজো কমিটি। কমিটির সিদ্ধিনাথ প্রসাদ গুপ্তা বলেন প্রশাসন পুজো আয়োজনে আমাদের যথেষ্টই সহযোগিতা করছে। আমাদের এখানে ছটঘাটে ৬০টি ছটব্রতী পরিবার পুজোতে অংশ নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ছটঘাট গুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজ তৎপরতার সাথেই চলছে।
