News Britant

গেরুয়া বসনে পাঠদান সন্ন্যাসিনী অধ্যাপিকার, খুশি পড়ুয়ারা

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ দুর্গাপূজার দীর্ঘ অবকাশের পরে মঙ্গলবার থেকে আবারও পঠনপাঠন শুরু হল রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে স্নাতক স্তরের পড়ুয়াদের ক্লাস নিলেন সদ্য সন্ন্যাসিনী হওয়া রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপিকা ড. রুমকি সরকার।  এদিন প্রথম সেমিস্টারের পড়ুয়াদের ক্লাস নেন তিনি। বিষয় ভিত্তিক বিষয়ে খুঁটিনাটি পড়ানোর ফাঁকে খোঁজ নেন প্রত্যেকর।  পড়ুয়ারা পুজোর ছুটিতে কতটা এগোলো, কারো কোনো সমস্যা তৈরি হয়েছে কি না, রাখলেন সেগুলোরও খেয়াল।

এছাড়াও  খেয়াল নেন প্রত্যেকের শরীর স্বাস্থ্যের। ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সন্ন্যাস গ্রহণ করা অধ্যাপক, অধ্যাপিকা থাকলেও রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা প্রথম ঘটলো। তাই প্রাথমিক ভাবে কৌতূহল ছিল পড়ুয়াদের মধ্যে। তবে ক্লাস শেষে পড়ুয়া শিল্পী মন্ডল বলে, আমাদের ম্যাম অসাধারণ ক্লাস নেন। বাংলা মাধ্যম থেকে আসা সত্ত্বেও আমাদের ভীষন সহযোগিতা করেন। আজও উনি একইরকম পাঠদান করলেন। আরেক পড়ুয়া সুরজিৎ রায় বলে, ম্যাম খুব শান্ত, ধীর।

আমাদেরকে আগের মত আজও খুব ভালো মতন পড়া বুঝিয়ে দিলেন। উনি ব্যক্তিগত জীবনে সন্ন্যাস নিলেও পড়াশোনার ক্ষেত্রে সবসময়ই একশ শতাংশ দেন। আমাদের ভীষণ ভালো লাগছে। অধ্যাপিকার এমন মনোভাবে খুশি তাঁর রিসার্চ স্কলাররাও। তারাও এদিন ম্যামের সাথে দেখা করেন, এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করেন।

ক্লাস থেকে বেরিয়ে ধীর পায়ে টিচার্স রুমে বসে অধ্যাপিকা ড. রুমকি সরকার তার রিসার্চ স্কলারদের সাথে গবেষণা নিয়ে কথা বলছিলেন। তারই ফাঁকে গেরুয়া পরিধান পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ক্লাস নেওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে সন্ন্যাসিনী ওই অধ্যাপিকা বলেন, ‘পেশাগত ভাবে ২০০৬সালে স্কুলে, ২০১০ সালে বীরভূম কলেজে এবং তারপর ২০১৬ সালে তৎকালীন রায়গঞ্জ কলেজে ভূগোল বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করি। কিন্তু নিজের মনের ভেতরের ইচ্ছেতেই বর্ধমানে গুরুর কাছে দীক্ষা নিয়েছিলাম আগেই। এরপর সব লোভ, কামনা, বাসনা, মোহ, মায়া ত্যাগ করে সন্ন্যাসিনী হওয়ার ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছিলো মনের ভেতরে।

তাই গেরুয়া পরিধান করে সন্ন্যাসিনী হওয়ার কথা পরিবারের সদস্যদের জানাই। তারা সহমত দিলে খাড়েশ্বর মহারাজের কাছে সন্ন্যাসিনী হওয়ার কৃপা লাভ করি।’ পড়ুয়াদেরকে নিজের সন্তান তূল্য বলে অধ্যাপিকা জানান, আজও ওদের থেকে ভীষণ ভালো রকম সাড়া পেয়েছি। আমার কাছে ওরা ভীষণ আন্তরিক। ফলে আজও পড়িয়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। পোশাক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাঁধন নেই জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ডঃ দুর্লভ সরকার বলেন, কে কেমন পোশাক পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেন, সেটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। তবে পড়ুয়ারা উপকৃত হচ্ছে কিনা, অধ্যাপকদের পাঠদানে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা, আমরা সেই বিষয় গুলোকেই দেখি।

Leave a Comment