News Britant

রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া পরিত্যক্ত শ্মশানেই দিবারাত্রি নেশার ঠেকে মজে কমবয়সীরা

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#রায়গঞ্জঃ কুলিক নদীর পূর্ব তীরে গড়ে উঠেছে রায়গঞ্জ শহর। আর পশ্চিম তীরে রেলের নদী ব্রিজ পার হলেই রয়েছে কোতগ্রাম পালপাড়া শ্মশান। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ২০০২ সালে এই শ্মশানের উদ্বোধন হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও এই শ্মশানে কোতগ্রাম, বাহিন, সোহারই, চাপদুয়ারের প্রয়াত হিন্দু অধিবাসীদের দাহ করার কাজ করা হবে বলে আশা ছিল বাসিন্দাদের। এর ফলে নদী পার করে দূরের রায়গঞ্জ বন্দর ও খরমুজাঘাটে যাওয়ার কষ্ট লাঘব হবে বাসিন্দাদের।

সেই শ্মশান তৈরি হলে আজও দাঁড়িয়ে আছে লোহার চুল্লী, আছে চুল্লীর শেড। কিন্তু নেই জলের বন্দোবস্ত, নেই বিদ্যুৎ, নেই শ্মশান যাত্রী প্রতীক্ষালয়, নেই শ্মশানে ঢোকার রাস্তা। সবমিলিয়ে আছে শ্মশান, কিন্তু তাতে নেই অনেক কিছুই। ফলে জমে উঠেছে নেশাকর ছেলেমেয়েদের আনাগোনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নেশাখোর ছেলেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে নেশা করতে আসে। তারা বলেন, এই পরিত্যক্ত শ্মশানে বিগত ২০ বছরে ৩টির মত শব দাহ হয়েছে। পরিকাঠামো না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা এখানে আসতে চান না। তাই এটি এখন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে।

এমন পরিত্যক্ত একটি শ্মশানে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পে ৪ লক্ষ ৪২ হাজার ২৭৮ টাকা খরচ করে, ২১২৯ টি শ্রম দিবস ব্যবহার করে শ্মশানের সমতলীকরনের কাজ করে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। এমনটাই জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা  তথা আইএনটিটিউইসির রায়গঞ্জ ব্লকের সভাপতি শৈলেন রক্ষিত। দিনভর  নেশাখোর দের যে আনাগোনা হয়, সেটা স্বীকার করে নিয়ে শৈলেন বাবু বলেন, শ্মশানের সমতলীকরনের কাজ করেও এলাকাটাকে সমাজবিরোধী মুক্ত করা যাচ্ছে না। দিনরাত নেশাখোরেরা ওখানে আসে। আসলে পঞ্চায়েত সদস্য সুনীল হালদার সহ বিজেপির সব সদস্যরা অকাজের। তাই উন্নয়নের কাজ আটকে যাচ্ছে।

তিনি জানান, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী ওই শ্মশান এলাকার ঘাট বাঁধিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করছি, দ্রুত কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারবে। অবশ্য, ওই সংসদের সদস্য সুনীল হালদারের দাবি, তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত উন্নয়নের জন্য  কোনো অর্থ বরাদ্দ করছে না। তাই শ্মশানটির সংস্কার করা যাচ্ছে না। ১০ নম্বর  মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য তথা বিরোধী দলনেতা মাধব দাস। তিনি বলেন, বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী ভোটের মুখে যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার এক আনা কাজও সম্পাদন করতে পারেন নি।

সুতরাং তার প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। তবে, পঞ্চায়েত প্রধানের দূর্বলতার কারণে ওই এলাকা নেশা মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে, বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী জানান, সার্ভে শেষে ২০০ মিটার নদী ঘাট বাঁধানোর জন্য  ৫২ লক্ষ টাকার একটি এস্টিমেট জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে। কাজ শেষ হলেই নেশাখোরদের আড্ডা কমবে, এলাকা স্বাভাবিক হবে। এই কাজ কবে বাস্তবায়িত হয়, সেদিকেই তাকিয়ে এলাকার শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ।

Leave a Comment