



#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: বাংলাদেশে মঙ্গলবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হলো ১৮২। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এরআগে বাংলাদেশে দুই বছরের অধিককাল ধরে মানুষের মঝে চরম ত্রাস ছিল করোনা। বিশ্ববাসীর মতো, কে কখন আক্রান্ত হবেন, আর বেঘোরে প্রাণ যাবে এই নিয়ে সবাই থাকতেন তটস্থ।
এজন্য সবাই হয়েছিলেন ঘরবন্দি। যদিও করোনা এখনো পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। তবে মাঝেমধ্যে আক্রান্ত ও প্রাণহানির খবর মিলছে। এবার বিশ্বত্রাস করোনাকে হটিয়ে ওই জায়গাটি দখলে নিয়েছে ডেঙ্গু। মঙ্গলবার ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু বাংলাদেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন।
করোনা মহামারি শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়। করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে ১ লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। ওই বছর সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে মারা যান ১৭৯ জন। এত দিন এটাই ছিল এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮২০ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে সর্বশেষ ডেঙ্গু পরিস্থিতির এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকায় ৪৫০ এবং সারা দেশে ৩৭০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ২২৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।
তাঁদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১ হাজার ৯৪৭ জন এবং দেশের বিভিন্ন সরকারি জেলা ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১ হাজার ২৭৬ জন। চলতি নভেম্বরের প্রথম ৮ দিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৭৮ জন এবং এই সময়ে মারা গেছেন ৪১ জন। গত অক্টোবর মাসে দেশে ২১ হাজার ৯৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান ৮৬ জন। সব মিলিয়ে গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত (৮ নভেম্বর) দেশে ৪৪ হাজার ৮০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৪১ হাজার ৩৯৭ রোগী। ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায়।
