



#মালবাজারঃ চাকুরী বা অর্থ নয়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে নুন্যতম সন্মানের দাবীতে সোমবার দুফুরে মাল পৌরসভার সামনে ধর্না দিল দশমীর ভাসান বিপর্যয়ের উদ্ধারকারী সহ শতাধিক গ্রাম বাসী। পরে আশ্বাস পেয়ে তারা ঘন্টা দেড় বাদে ধর্না তুলে নেয়। গত ৫ অক্টোবর মালনদীর ঘাটে দশমীর ভাসান চলাকালীন আচমকা হরপা বানে ভেসে যায় বহু মানুষ। সেদিন সেই কালো রাতে ৮ জনের মৃত্যু হয় এবং ১৩ জন জখম হয়। সেদিন নিজেদের জীবন বিপন্ন করে কিছু যুবক উত্তাল জলে ঝাপ দিয়ে বহু মানুষদের উদ্ধার করে।
ঘটনার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শোক প্রকাশ করেন এবং মৃতের পরিবার পিছু ২ লক্ষ ও জখমদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানান। পরে তারা সেই অর্থ পেয়েও যান। এরপর উদ্ধারকারীদের বিভিন্ন মহল থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অবশেষে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সয়ং গত ১৭ অক্টোবর মালবাজার শহরে আসেন এবং মৃতের পরিবারদের সাথে দেখা করেন। ১৮ অক্টোবর মাল আদর্শ বিদ্যা ভবনে প্রশাসনিক বৈঠকে মৃতদের পরিবারের একজন সদস্যকে চাকুরির অফার লেটার দেন। সেদিন উদ্ধারকারীদের সান্মানিক ১ লক্ষ টাকা এবং বিশেষ সুযোগের দেন।
সেদিন আশ্চর্যজনক ভাবে মেটেলি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শালবাড়ি গ্রামের দুই উদ্ধারকারী তরিকুল ইসলাম ও ফরিদুল ইসলামের নাম বাদ যায়। সেদিন তারা মাল আদর্শ বিদ্যা ভবনের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে নিজেদের সন্মানের দাবীতে বিভিন্ন আবেদন করেন এবং আশ্বাসও পান বলে দুই যুবক জানান। দীর্ঘ ৪০ দিনের মধ্যে কোন সন্মান বা সুযোগ না পেয়ে সোমবার তারা এবং শালবাড়ি এলাকার শতাধিক মানুষ হাতে প্লাকাট নিয়ে মাল পৌর সভার সামনে ধর্না দেন। গেটের কাছেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
গেটের সামনে দাড়িয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, সেদিন আমরা দুই জন জলে ঝাপ দিয়ে কিছু মানুষদের উদ্ধার করি। এজন্য রাজ্যের মন্ত্রী বুলু চিকবরাইক সহ বিভিন্ন মহল আমাদের সন্মানিত করে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় আমাদের ডাকা হয়নি। পরে পৌরসভার চেয়ারম্যান আমাদের নানা ভাবে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু, কোন কিছু হয়নি। আমাদের নিয়ে তালবাহানা করছে।আমরা চাকুরী চাইনা, অর্থ চাইনা, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে নুন্যতম সন্মান চাই। এবিষয়ে চেয়ারম্যানের লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে ধর্নায় থাকব”।
ধর্না দেখে নিজের কাজ ফেলে বেরিয়ে আসেন চেয়ারম্যান স্বপন সাহা। তিনি বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলেন এবং কয়েকজনকে নিজের চেম্বারে ডেকে নেন। তাদের আশ্বস্ত করেন। পরে ধর্না তুলে দুই যুবক ও গ্রামবাসীরা ফিরে যায়। পরে চেয়ারম্যান শ্রী সাহা বলেন, “গত ১৮ অক্টোবর কোন ভুলের জন্য এই দুই সাহসী যুবকের নাম বাদ পরে। আমরা এই ঘটনা জেলা শাসককে জানিয়েছি। তিনি নবান্নের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। একাজে সময় লাগে সেটা ওদের বলেছি। ওরা বুঝতে পেরেছেন। ওদের সন্মান ও সুযোগ দিতে পারলে আমাদের ভালো লাগবে”। শেষে তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের লিখিত ভাবে আবেদন করেতে চেয়ারম্যান বলেছেন। আমরা লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি।
