



#দেবলীনা ব্যানার্জী: বাংলা গানে এবার সুর দেবেন গ্র্যামি বিজয়ী প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ প্রকাশ সোন্টাক্কে। ক্ল্যাসিক্যাল ও ওয়ার্ল্ড ফিউশন ঘরানার সঙ্গীত নিয়ে দেশে বিদেশে কনসার্ট করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুপরিচিত প্রকাশজীর ঝুলিতে রয়েছে বহু আন্তর্জাতিক মানের সম্মান ও পুরস্কার। এহেন সুরকার, যন্ত্রশিল্পী, কন্ঠশিল্পী তথা প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ মানুষটি নিরলসভাবে সঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে চলেছেন বিভিন্ন ঘরানায় বিভিন্ন ভাবে।
শিবমনি ও সুফি কণ্ঠশিল্পী রুণা রিজভির সাথে ‘নিউ লাইফ’ এ তিনি সুফি ছন্দ নিয়েও কাজ করেছেন। এবার তাঁর কম্পোজ করা সুরে তৈরি হচ্ছে বাংলা গান। তাঁর সুরে ‘একা দাঁড়িয়ে তোর পথ চেয়ে’ এই বাংলা গানটি গাইছেন কলকাতার সঙ্গীতশিল্পী বাম্পাই চক্রবর্তী। গানের কথাও বাম্পাইয়ের। কিভাবে যোগাযোগ হল প্রকাশজীর মত মানুষের সাথে, একান্ত আলাপচারিতায় নিজমুখে জানালেন বাম্পাই চক্রবর্তী।

বাম্পাই: পুজোয় মেখলা দাশগুপ্ত ও শিলাদিত্য চক্রবর্তীর সাথে তিনটে গানের কাজ কমপ্লিট করার পরেই ভেবেছিলাম পরিবার নিয়ে একটু ছুটি কাটাতে যাব উত্তরবঙ্গ। বেশ আনন্দেই ছিলাম সে সব ভাবনা নিয়ে, দিনক্ষণও ঠিক করে ফেলেছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার জীবনে নেমে এলো এক ভয়ানক অন্ধকার। যা আমি কল্পনাও করতে পারিনি, সে সময় আমার দিনগুলো কালো রাতের মতই কাটছিলো। যথারীতি এমন ভয়ঙ্কর সময়েও সঙ্গী ছিল শুধু খাতা কলম, লিখেও ফেলেছিলাম বেশ কিছু গান। এমনিতেও আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আলো টিমটিম করে জ্বলছে, ভালো কাজের কদর তো দূরেই থাক, কাজ করে যা অর্থ পাওয়া যায় তা নূন্যতম । যথারীতি কয়েকটি গান বিক্রির ব্যাপার নিয়ে একটি কোম্পানির সাথে আমার কথা হয় এবং একটা মিটিং ফিক্সড করা হয়। মিটিং অ্যাটেন্ড করি সময়মত। দুদিন যেতে না যেতেই হঠাৎ জানতে পারি প্রকাশ জি আমাকে ডেকেছেন। এ তো আমার কাছে স্বপ্ন। পরে জানতে পারি উনি ওই কোম্পানির ক্রিয়েটিভ ডিপার্টমেন্টের হেড।
দেবলীনা: প্রথমদিনের সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা বলো
বাম্পাই: ওনার সাথে সাক্ষাৎ হয়, আমি যখন যাই তখন তিনি গীটার টেক করছিলেন। আমি যেতেই ইশারায় আমাকে তিনি বসতে বলেন। মনে ছিল অজানা ভয়, পাশাপাশি এক আকাশ আনন্দ। যথাসময়ে গীটার টেক শেষ করেই উনি ইংরেজিতে বলে বসলেন এই ট্র্যাক টার উপরে কিছু গাও। আমি ভেবেই কূল পাচ্ছিলাম না যে কি গাইব। কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকটা কথার কলি ইনস্ট্যান্ট লিখে সেই ট্র্যাকে আমি সাজাই। অর্থাৎ স্থায়ী ও অন্তরা টা ওখানেই গেয়ে ফেলি, ভদ্রলোকের আমার ভোকাল টেক্সচার টা ভারী পছন্দ হয়। যা একেবারেই অকল্পনীয় , একজন গ্র্যামি উইনার আমাকে ডেকেছেন, আমার কাছে এটাই বিরাট পাওয়া। তার উপর তিনি আমাকে দিয়েই ওই ট্র্যাক টার রূপ দান করালেন, যেটা আমি মনে করি ঈশ্বরের আশীর্বাদ। এই ভাবেই গানের পরবর্তী অংশ গুলো রেকর্ড হয়, যা ওখানে বসেই আমি লিখেছিলাম। বাংলা গান, যা আমার কাছে স্বপ্ন, এ এক বিরাট পাওয়া, দারুন মজার মানুষ, মজা করতে করতে আমরা কাজটা করেছি, যা আমার জীবনের ইতিহাসে লেখা থাকবে অক্ষরে অক্ষরে।
দেবলীনা: প্রকাশজি মানুষ হিসেবে কেমন?
বাম্পাই: ভদ্রলোক বেশ মজার, তবে বাংলা টা ঠিক রপ্ত করতে পারেন নি সেটা বুঝলাম কথা বলে। ইংরেজি হিন্দীতেই কথা বলছিলেন। আর আমার মনে হয় সুন্দর মানুষ না হলে ভালো শিল্পী হওয়া যায় না।
দেবলীনা: এই নতুন গানটা নিয়ে কিছু বলো
বাম্পাই: গান নিয়ে যদি বলি, এমন ধরনের গান আমি আগে কখনও গাইনি কিংবা সুযোগ পাইনি। এটা পুরো ফোকও নয়, আবার পুরো আধুনিকও নয়, আবার অনেকটাই আধুনিক। ইলেকট্রো মিউজিক, বেশ ইন্টারেস্টিং, যেখানে আমার কণ্ঠকে একটু অন্যরকম ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি খুব আনন্দিত এমন একটা কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পেরে।
