News Britant

দিল্লির শ্রদ্ধা ও অঞ্জন কাণ্ডের ছায়া এবার বায়লাদেশে শিশুর মাথা বিছিন্ন করে দেহ করা হয় ৬ টুকরা

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: দিল্লির মেহেরৌলিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করে দেহ ৩৫ টুকরো করে তার প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। দিল্লিরই পাণ্ডবনগরের বাসিন্দা অঞ্জন দাসকে শুধুমাত্র পরকীয়া সন্দেহ করে তাঁকে খুন করে  স্ত্রী পুনম ও ছেলে দীপক। দুটি ক্ষেত্রেই পুলিশের জালে অপরাধীরা। এবার একই কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টলায়। এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটে ছয় বছরের শিশু আয়াতকে মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে অপহরণের পর।

ঘটনার দিন বিকেলে আবির তার বাড়ীওয়ালার মেয়ে শিশু  আয়াতকে অপহরণ করে। অন্য জায়গায় নিয়ে গেলে ভয়ে আয়াত চিৎকার করলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘাতক আবির। পরে মরদেহ আকমল আলী সড়কের বাসায় নিয়ে ছয় টুকরা করে। লাশ কেটে ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দেয় খুনি আবির মিয়া (১৯)। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর হাতে গ্রেপ্তারের পর কাণ্ডের বরণনা দিয়ে দায় স্বীকার করেছে আবির। আবিরের পরিবার শিশু আয়াতের বাসায় ভাড়া থাকে।

গত ১৫ নভেম্বর নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা ওয়াজ মুন্সিবাড়ি এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আয়াত বাসার পাশে একটি মক্তবে বিকেলে পড়তে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, শিশুটি মক্তবে যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ইপিজেড থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, আটক আবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশু আয়াতকে অপহরণ করেছিল।

কিন্তু তার মুঠোফোনের সিম কাজ না করায় মুক্তিপণের জন্য শিশুটির পরিবারকে কল দিতে পারেননি। নিজে ধরা পড়ে যাবে, এই ভয়ে শিশুটিকে কেটে ছয় টুকরা করে। পরে তা সাগরে ভাসিয়ে দেয়। আবির আরও বলে, সত্যিকারের অপরাধের ঘটনা নিয়ে তৈরি টিভি ধারাবাহিক ক্রাইম পেট্রোল দেখে সে এমন পরিকল্পনা করেছিল। হত্যার জন্য আবির যে দোকান থেকে দা–ছুরি কিনেছিল, সেই দোকানদারকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। আবিরকে সহায়তাকারী দোকানদার মো. হাসিবকে আটক করা হয়েছে। আবিরের বাবা ভ্যানচালক এবং তার মা পোশাক কারখানার শ্রমিক।

আবির বেকার। ছয় টুকরার পর এবার শিশু আয়াতের খণ্ডিত মাথাও উদ্ধার করেছে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই)। আজ বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের শেষপ্রান্তে নালা সংলগ্ন স্লুইচগেট এলাকা থেকে মাথাটি উদ্ধার করা হয়েছে। স্লুইচগেটে আটকে থাকা জলের মধ্যে জমা পলিথিনে তল্লাশি করে মাথাটি পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, দিল্লি কাণ্ডে খুনের পর লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে আফতাব। চলতি বছর ১৮ মে খুন করে প্রথমে তা রেখে দেয় ফ্রিজে। এরপর দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলতে থাকে সে। আফতাবকে ভালবেসে পরিবার, চাকরি, শহর ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিল তরুণী। যদিও তাঁর পরিণতি হয় মর্মান্তিক। অপরদিকে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটে দিল্লিতে। স্বামী পরকীয়ায় মজেছে সেই সন্দেহে স্বামীকে খুন করে দেহ ২২ টুকরো করে তার স্ত্রী ও ছেলে। দিল্লির পাণ্ডবনগরের বাসিন্দা অঞ্জন দাস। স্ত্রী পুনম ও ছেলে দীপককে নিয়ে তাঁর সংসার ছিল।

জুন মাসে পূর্ব দিল্লির পাণ্ডবনগর এলাকা থেকে কাটা দেহাংশ উদ্ধার হয়েছিল। কিন্তু মৃতের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। সম্প্রতি শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনের কিনারা করে দিল্লি পুলিশ। সেই একই কায়দায় পাণ্ডবনগর এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া দেহাংশের রহস্যভেদ করতে উঠেপড়ে লাগে দিল্লি পুলিশ। এরপর বেড়িয়ে আসে আসল কাণ্ড। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, মৃতের ছেলে দিল্লির পাণ্ডবনগর এলাকায় দেহের টুকরো ছড়াচ্ছে।

Leave a Comment