



#মালবাজারঃ মাল পৌরসভার কাউন্সিলর অজয় লোহারের প্রতি জাত তুলে কটুক্তি করার বিরুদ্ধে প্রশাসন ও পুলিশ এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয় নি। এই অভিযোগে “অল আদিবাসী ইউনাইটেড অ্যাসোসিয়েশন” নামের এক অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে কয়েকটি আদিবাসী সংগঠন মালবাজার শহরে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি রাজেশ লাকরা (টাইগার) ও নেহা দাস নামের এক মহিলার কুশপুত্তলিকা জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং মহকুমাশাসকের দপ্তরে স্মারক লিপি জমা দেয়।
এদিন দুপুর ১ টা নাগাদ মালবাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে “অল আদিবাসী ইউনাইটেড অ্যাসোসিয়েশন” য়ের ব্যানারে কয়েকশ আদিবাসী মানুষ নেহা দাস ও রাজেশ লাকরারা কুশপুত্তলি নিয়ে মিছিল শুরু করে জাতীয় সরক ধরে ক্যালটেক্স মোর পর্যন্ত যায়। সেখান থেকে ফিরে মাল মহকুমাশাসকের দপ্তরের সামনে জাতীয় সড়কে দুই কুশপুত্তলি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। পরে মহকুমাশাসকের অনুপোস্থিতিতে ডিএমডিশি রবীন্দ্রনাথ সরকারের সাথে দেখা করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবীতে স্মারক লিপি জমা দেন।
সংগঠনের নেতা চন্দন লোহারা বলেন, গত ২১ নভেম্বর মাল পৌরসভা চত্বর আদিবাসী কাউন্সিলর অজয় লোহারের প্রতি নেহা দাস নামের এক মহিলা জাতিগত অশালীন শব্দ প্রয়োগ করে কটুক্তি করে। পরে অজয় লোহারের বাবা গঙ্গা লোহার গত ২২ নভেম্বর মাল থানায় নেহা দাস ও কয়েকজনের নামে অভিযোগ করেন। এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয় নি। এই ঘটনায় আমরা আদিবাসী সমাজ অত্যন্ত মর্মাহত ও দুঃখিত। অবিলম্বে ব্যবস্থা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হব। যেখানে দেশের রাস্ট্রপতি একজন আদিবাসী মহিলা সেখানে আদিবাসীদের প্রতি এই কটুক্তি মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে”।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাল পৌরসভার চত্বরে নেহা দাস অজয় লোহারের প্রতি অশালীন শব্দ ব্যবহার করার পর ভুল বুঝতে পেরে প্রকাশ্যে আদিবাসী সমাজের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। নেহা দাসের ক্ষমা চাওয়ার পর আইএনটিটিইউ সি’র জেলা সভাপতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, “যখন কেউ প্রকাশ্যে ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তখন তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিৎ।এটাই মানুষের কর্তব্য। এনিয়ে বাড়াবাড়ি করা অনুচিত’।
রাজেশ লাকরার এই মন্তব্যে আদিবাসীদের অনেকে ক্ষুব্ধ। আজ বিক্ষোভে তা প্রকাশ পায়। বিক্ষোভকারীদের অনেকে জানান, আদিবাসীদের প্রতি কটুক্তি করা দন্ডনিয় অপরাধ। সেক্ষেত্রে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। রাজেশ লাকরা ক্ষমা করার কে? এজন্য আজ তার কুশপুত্তলি জ্বালানো হয়।
আরও উল্লেখ্য, এদিন বিক্ষোভে যেমন উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আগাস্তুস কেরকেট্টা তেমন ছিলেন গত বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী মহেশ বাগে। এনিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমিক নেতা রাজেশ লাকরা বলেন, আজকের ঘটনা আরএসএস’য়ের এজেন্ডার বহিঃপ্রকাশ। যেখানে ওদের নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছে ডিসেম্বরে কিছু হবে। এটাই সেরকম। যেখানে নেহা দাস ভুল বুঝতে পেরে আদালতে সারেন্ডার্ড করে জামিন নিয়েছে সেখানে আইনের উপর আস্থা রাখাই উচিত। পুলিন গোলদার, আগাস্তুস কেরকেট্টা, অজয় লোহার আর এস এসের এজেন্ট। আমার পাশে রয়েছে অস্কার ওরাওঁ।
ওর উপর পুলিন গোলদার ও অজয় লোহার নিয়মিত অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে মারধর করেছে। ছেলেটা মাল থানায় গত ২৯ নভেম্বর এজাহার করেছে। তার পক্ষে কেউ নেই কেন? এসব শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চক্রান্ত ও আর এস এসের প্রয়াস”। এনিয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেন, আজকের ঘটনায় তৃণমূলের কেউ ছিলো কি না? তা দেখা হচ্ছে।
