



#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: বাংলাদেশে একটি প্রতারক চক্র যৌনশক্তি বাড়ানোর নামে ঘুমপাড়ানি বড়ি বিক্রির নামে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে সাধারণের সর্বস্ব লুটপাট করে নিত। প্রতারকদের মূল টার্গেটে ছিল বাসের যাত্রী। একটি প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটেরেআধিকারীকরা। প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে ৫৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এরপর তিনজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তারা বের করে আনে চক্রটির অপরাধ সংঘটনের পুরো প্রক্রিয়া। চক্রের সদস্য প্রথমে বাসে উঠে একজনকে টার্গেট করে। তাকে যৌন সমস্যা সমাধান সংক্রান্ত বই পড়ানোর ফাঁকে একটা বড়ি খাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিশ্বাস অর্জন করতে প্রথমে নিজেদের লোক একটা অন্য একটা বড়ি খেয়ে ফেলেন। এরপর টার্গেট করা ব্যক্তি ওষুধ খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর তাকে চক্রের সদস্যরা ঘিরে ধরেন। টাকা-মোবাইল নিয়ে গাড়ি থেকে সবাই নেমে পড়েন।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এভাবে দীর্ঘদিন ধরে সর্বস্ব লুট করে আসছিল চক্রটি। চক্রের সদস্যদের এরকম টোপ গিলে বড়ি খেয়েছিলেন ৫৪ বয়সী এক ব্যক্তি। ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এরপর ওই কাণ্ডের সাথে জড়িত তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে- নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ইব্রাহিমের ছেলে মহিন উদ্দিন (৩০), একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৪২) ও ফেনী ছাগলনাইয়ার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪২)।
তারা সবাই নগরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত। হালিশহর ও পাহাড়তলী থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাজমুল হাসান জানান, অভিনব কায়দায় বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বস্ব হাতিয়ে নিত চক্রটি। তাদের দলে চারজন আছে। তিনজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। বাকি একজনকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। চক্রের সদস্যরা কয়েক প্রকার ওষুধের মিশ্রণে চেতনানাশক বড়ি বানাত। এগুলোকে যৌন উত্তেজক বড়ি বলে কৌশলে বাসযাত্রীদের খাওয়ানো হতো।
এরপর সবকিছু নিয়ে অভিযুক্তরা গাড়ি থেকে নামতো। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়ার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, হত্যা মামলাটি ক্লুলেস ছিল। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করেছি। পাশাপাশি চক্রটির আদ্যোপান্ত বের করে এনেছি। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।
