



#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: বাংলাদেশে শীত জেঁকে বসেছে। বাংলাদেশের পশ্চিমের জেলা যশোরে বৃহস্পতিবার ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকায় তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আরও ২-১ দিন সারা দেশে এমন তীব্র ঠাণ্ডা থাকবে। তারপর তাপমাত্রা একটু বাড়বে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ জুড়ে অবস্থান করছে। উচ্চচাপ বলয় থাকায় উত্তর-পশ্চিম থেকে হিমেল বাতাস বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত হওয়ার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়।
কয়েকদিন মধ্যরাত থেকে দীর্ঘ সময় ধরে কুয়াশা রয়েছে। দিনে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করতে পারে না। গড় তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে ঠাণ্ডার তীব্রতা রয়েছে। দিনের চেয়ে রাত বড় হওয়ায় রাতে অনেকক্ষণ ধরে ঠাণ্ডা পড়ে। ঘন কুয়াশা ও বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতির তীব্রতা আছে। ‘তিনি বলেন, ‘রাতের তাপমাত্রা ৯-১৫ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। এর ফলে সারা মাসে ঠাণ্ডা থাকবে। কিন্তু শীতের তীব্রতা কমতে থাকবে। রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গায় আরও ২-৩ দিন শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে।’
রাজধানীসহ প্রায় পুরো দেশ গতকাল কুয়াশায় ঢাকা ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে, ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে বাংলাদেশের উত্তরের জেলা রংপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্য থেকে এক সপ্তাহে ১৫ শিশু ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। যা সপ্তাহে স্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে দ্বিগুণ। এদের বয়স এক মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে। হাসপাতালের শিশু বিভাগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স শিখলি খাতুন বলেন, শীতজনিত রোগে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহের মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশু ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা যায়, প্রতিটি শয্যায় একাধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। শয্যা না পেয়ে অনেক শিশুকে মেঝেতে বিছানা পেতে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো শয্যায় মায়েরা তাঁদের অসুস্থ শিশুসন্তান নিয়ে বসে আছেন। শিশুর সঙ্গে থাকা অভিভাবকদের ভিড়ে নার্স ও চিকিৎসকেরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
