



#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ দেশ মাতৃকার ভাবনায় অনুপ্রানিত হয়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের সুবিধার্থে, এক অভিনব স্মার্ট গ্লাভস ও স্মার্ট স্টিক বানিয়ে নজরে উঠে এল রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যা বিভাগের পড়ুয়ারা। সম্প্রতি ভারত, চিন সীমান্তে ২ দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে ধস্তাধস্তি হয়, তার প্রেক্ষিতেই তাদের এমন আবিষ্কার বলে জানালো পড়ুয়ারা। 

তাদের দাবি, এই স্মার্ট গ্লাভস ও স্টিক গুলোতে এক মূহুর্তে ১০ হাজার ভোল্টের ইলেকট্রিক শক লাগবে, এতে বিপক্ষের আক্রমণকারীরা ধরাশায়ী হয়ে পড়বে। সাধারণ গ্লাভস ও জলের পাইপকে এভাবে ব্যবহার করায় বাইরে থেকে সাধারণ লাঠি মনে হলেও এটা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে, সে বিষয়ে একমত পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস চলার ফাঁকে তাদের এই অভিনব আবিস্কার যে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অনেকটাই উপকৃত করবে, সেবিষয়ে তারা ভীষণ আশাবাদী। এদিন নিজেরা হাতে করে স্মার্ট গ্লাভস ও স্মার্ট স্টিকের কার্যকারিতা দেখাতে দেখাতে পড়ুয়ারা বলে, এই গ্লাভস গুলো দেখতে সাধারণ।

কিন্তু এতে ব্যাটারী চালিত শক্তি তৈরি করার ক্ষমতা আছে, যা দিয়ে নিরাপত্তা রক্ষীরা বিপুল জনসংখ্যাকে সরাতে পারবে। এছাড়াও স্টিকটির ভেতরে থাকবে কাঁটা তার, সেটাতেও বিপক্ষকে কাহিল করতে না পারলে, কাঁটাতারের সাথে সাথে ইলেকট্রিক শকও দেওয়া যাবে। সবশেষে এর মধ্যে লুকানো থাকবে শক্তিশালী চাকু। যা বিভিন্ন কাজে আসতে পারে। এগুলো তৈরি করতে কেমন খরচ পড়বে, জানতে চাইলে, দূর্বা সাহা, শার্লি সাহা, সুমন পারভেজ, প্রকাশ প্রসাদ, দেবাঞ্জন পালেরা বলে, গ্লাভস গুলোর খরচ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, আর স্টিক তৈরির খরচ সবমিলিয়ে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পড়তে পারে। এতে যেমন সেনাবাহিনীর খরচ বাঁচবে, তেমনি বিপক্ষকে ঘায়েলও করা সম্ভব হবে।
পড়ুয়াদের এই পরিকল্পনায় যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যা বিভাগের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট বাপ্পা রায়। এর আগের ইলেকট্রনিক জুতো বানিয়ে তিনি পেটেন্ট পেতে আবেদন জানিয়ে রেখেছেন। এবারের নতুন যন্ত্রে যে অভিনবত্ব আছে, সেটা জানিয়ে বাপ্পা বাবু বলেন, বড় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে এটা দেশের ভেতরে যেমন কাজে আসবে, তেমনি চিনের মত দেশের বর্ডারে কার্যকর হবে। তিনি বলেন, এটা ভীষণ কার্যকরী অস্ত্র হিসেবে সীমান্ত এলাকায় এবং পুলিশ কর্মীরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ব্যবহার করতে পারে। দেখতেও সাধারণ, পাশাপাশি এটা তৈরির খরচও কম।








বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ডঃ দুর্লভ সরকার। তিনি বলেন, আমরা আমাদের ছাত্র ছাত্রী দের সবসময়ই নতুন কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে সহযোগিতা করি। পড়ুয়া, শিক্ষকদের এই স্মার্ট গ্লাভস ও স্মার্ট স্টিক নিয়ে পেপার প্রকাশ ও পেটেন্টের জন্য ওরা চাইলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ন্যাক মূল্যায়ন যে বিশ্ববিদ্যালয়কে পিছনের সারিতে ফেলে দিয়েছে, যেখানে পড়ুয়া, গবেষকদের এখনও উন্নত পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি, সেখানে একেরপর এক আবিস্কার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকুটে যে নতুন পালক জুড়ে চলেছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয় একদিন ঘুরে দাঁড়াবেই, এমনটাই বিশ্বাস শিক্ষা মহলের।







