



#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের উদ্যোগে এবং আর্থিক সহয়তায় শুরু হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কংগ্রেসের আসর। আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতার পর এবার হবে রাজ্য পর্যায়ের আসর। সেখানে সফল হলে জুটবে বড় অঙ্কের আর্থিক সহয়তা এবং দেশের সেরা বিজ্ঞানীদের পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ। সেই লক্ষ্যে নেমে দারুণ সফলতা পেল রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগ। সম্প্রতি গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পেপার প্রেজেন্টেশন বিভাগে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বিভাগে ৪ টি সেরার শিরোপা ছিনিয়ে এনেছে প্রানীবিদ্যা বিভাগের গবেষকেরা।


জানা গেছে, রাজ্য স্তরে গবেষণার মান উন্নত করতে, তথা গবেষকদের আরও বেশি উৎসাহ দিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজি দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ৫ম আঞ্চলিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কংগ্রেস। এখানে রাজ্যের সমস্ত গবেষণার ক্ষেত্রকে ৭টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে রয়েছে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার গবেষকেরা।


গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলা, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলী জেলা, পশ্চিম বঙ্গ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নদীয়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা, মৌলানা আজাদ কলেজের তত্ত্বাবধানে কোলকাতা, হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা, রাজা নরেন্দ্র লাল খান মহিলা কলেজের তত্ত্বাবধানে পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূম জেলার গবেষকেরা।


এদিন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পার্থ সারথী নন্দী বলেন, গত ১১ ও ১২ই জানুয়ারি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগের ৩ গবেষক ও ১জন আংশিক সময়ের অধ্যাপক সফলতার সাথে প্রথম রাউন্ডে অত্যন্ত ভালো ফলাফল করেছে। ২০১৫ সালে স্থাপনার পর থেকে ধীরে ধীরে গবেষণার মান আমরা বৃদ্ধি করছি। এমন স্বীকৃতি পেলে আমাদের গবেষকেরা কাজের উৎসাহ পাবে। এদিকে যে গবেষক আঞ্চলিক পর্যায়ে ২য় হয়ে রাজ্য স্তরে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি হলেন ইউরেকা মন্ডল। উনি হুগলীর একটি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপনার সাথে যুক্ত। তাঁর সাথে কথা বলে জানা গেল, তাঁর গবেষণার বিষয় হল ধান গাছের ওপর মাজরা পোকার আক্রমণ প্রতিরোধে জৈব কীটনাশকের ব্যবহার।

তিনি বলেন, সেই গবেষণার পেপার ওখানে উপস্থাপন করেছি। ৫ মিনিটে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়েছি, তারপর কয়েক মিনিটের প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল। সবটাতে ভালো হওয়ায়, রাজ্য স্তরে অংশ নিতে চলেছি। এতে আমি ভীষণ খুশি। এমন সফলতা পেয়ে আমি সর্বত ভাবে আমার গাইড অধ্যাপক কৌশিক চক্রবর্তী, বিভাগীয় প্রধান পার্থ সারথী নন্দী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। নিজের তত্ত্বাবধানে গবেষক ছাত্রীর এমন সাফল্য উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও গবেষণার স্বীকৃতি পাওয়ায় দায়িত্ব আরও বাড়ল বলেই মনে করেন অধ্যাপক কৌশিক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এমন স্বীকৃতি আগামী দিনে আরও ভালো কাজের প্রেরনা জোগাবে। পাশাপাশি অন্যান্যদের কাজ থকে নতুন কাজ শিখতে পারবে। বিভাগের সকলকে অভিনন্দন।

জানা গেছে, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগের ইউরেকা ছাড়াও আরও যারা সেরা ৫ জনের তালিকায় এসেছেন, তাঁরা হলেন রূপজ্যোতি দাস, দীপ্যমান দাস, দেবঋষি মোদক। আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারী জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে রাজ্য পর্যায়ের আসর বসতে পারে বলে জানালেন ইউরেকা মন্ডল। চলছে চুড়ান্ত প্রস্তুতি।





