



#সুমন রায়, রায়গঞ্জঃ তুন্দ্রা বিন নামক একটি বিরল পাখির দেখা মিললো রায়গঞ্জের একটি জলাশয়ে আর সেই পাখিটিকে ক্যামরাবন্দী করতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এলেন পাখি প্রেমী ও বিশেষজ্ঞরা। এটি একটি রাশিয়ান প্রজাতির হাঁস , যা সচরাচর এদেশে দেখা যায়না। রায়গঞ্জের পানিশালা এলাকায় অবস্থিত দীপরাজার দিঘী নামক একটি জলাশয়ে এর খোঁজ পাওয়া যায়। এরপরই এই পাখির ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে পাখি প্রেমীরা।
প্রতি বছর ওই জলাশয়ে প্রচুর পরিমান গ্রেল্যাগ প্রজাতির হাঁসের দেখা মিললেও এবছর তুন্দ্রা বিন নামক নতুন প্রজাতির হাঁসের দেখা মেলায় কুলিকের পাশাপাশি নতুন আরও একটি পাখিরালয় হওয়ার সম্ভবনা দেখছেন পাখি প্রেমীরা। বহুবছর ধরে ওই জলাশয়ে বিপুল পরিমানে সাইবেরিয়ান প্রজাতির হাঁস গ্রেল্যাগ গুসের (Graylag Goose) আনাগোনা দেখা গেলোও এবছর হঠাৎ তুন্দ্রা বিন (Tundra Bean Goose) হাঁসের দেখা মেলায় উচ্ছ্বসিত পাখি বিশেষজ্ঞ মহল।
পাখি বিশেষজ্ঞরা জানান, রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে গ্রেল্যাগ প্রজাতির হাঁসরা প্রায় সময়ে ভারতে এলেও তুন্দ্রা বিন নামক হাঁসটির দেখা ভারতে হাতেগুনে কয়েকবার মিলেছে। এমনকি এই হাঁসটিকে এই রাজ্যে গজলডোবায় একবার ২০১৬ সালে দেখা গিয়েছিলো বলে জানান পাখি বিশেষজ্ঞরা। এদিন জলাশয় জুড়ে গ্রেল্যাগ হাঁসের মাঝে একটি মাত্র তুন্দ্রা বিন হাঁসকে খুঁজে পাওয়া যায়।তবে এতোগুলো হাঁসের মাঝে এই তুন্দ্রা বিন হাঁসটির চেনার উপায় কী?
কি করে চিনবেন এই এই তুন্দ্রা বিন গুসকে? হাঁসটির বৈশিষ্ট্য হলো, হাঁসটির ঠোঁট কালো এবং ঠোঁটের মাঝে রয়েছে একটি ছোট কমলা দাগ এবং শরীরটি কালচে যা বাকি হাঁসদের থেকে আলাদা। এদের খাবার জলাশয়ের উদ্ভিদ যা খেয়েই এরা জীবনধারন করে বলে জানান পাখি বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা থেকে এই বিরল হাঁসের ছবি তুলতে ছুটে এসেছেন প্রীতম রায়।বিরল প্রজাতির এই পাখির খবর চাউর হতে কলকাতা, শিলিগুড়ি, মালদা, বালুরঘাট থেকে ছুটে এসেছেন পাখি প্রেমী ও বিশেষজ্ঞরা। বন দপ্তরের আধিকারীর, কর্মী থেকে পাখি প্রেমী ও বিশেষজ্ঞরা সকাল থেকে ক্যামেরা বন্দী করতে ব্যস্ত এই বিরল প্রজাতির পাখিটিকে।
অন্যদিকে গ্রামের জলাশয়ে বিরল প্রজাতির দেখা মেলায় উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা। তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বিপুল পরিমান হাঁসের আনাগোনা তাঁরা লক্ষ্য করেছেন, তবে এই বছর বিরল প্রজাতির যে পাখি এসেছে তা তাঁরা বনদপ্তরের কর্মীদের কাছ থেকে জেনেছেন। তাঁরা চাইছেন ঐ জলাশয়টিতে সরকারি ভাবে বন দফতরের উদ্যোগ যাতে পাখিরালয় হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং পাখিদের দেখাশোনার ব্যবস্থা করা হোক।
