





#মালবাজার: রাজ্যে প্রথম চালু হল দুয়ারে ডাক্টর। মাল ব্লকের এলেনবাড়ি চাবাগানে মঙ্গলবার থেকে চালু হলো এই পরিসেবা। এলেনবাড়ি চাবাগানের হাসপাতাল প্রাঙ্গনে এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির এডিএম প্রিয় দর্শিনী ভট্টাচার্য, মাল ব্লকের বিএমও এইচ দীপঙ্কর কর, জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের অ্যাডিশনাল সুপারটেন্ডেন ডক্টর সুরজিত সেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সি এম ও এইচ দীপ সামন্ত মালবাজার এবং এলেনবাড়ি চাবাগানের সিনিয়র ম্যানেজার হেমন্ত গোপিয়া সহ অন্যান্যরা।


এদিনের এই শিবিরে দারুন সারা মিলেছে। এই প্রথম এই শিবির চালু হওয়ায় চা শ্রমিকেরা দলে দলে পরিসেবা নিতে আসে এই শিবিরে। বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ঔষধ পেয়ে খুশি চা শ্রমিকেরা। এদিন প্রায় ১২ জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন এই শিবিরে। পাশাপাশি রোগীদের বিভিন্ন পরিক্ষাও করা হয়।


মঙ্গলবার দিন এই শিবেরে চিকিৎসা পরিসেবা নিতে আসেন এলেনবাড়ি চাবাগানের শ্রমিক বদ্রীনারায়ন প্রধান, আবদেশ রজক, মনোজ ওড়াও-রা বলেন, আজ আমরা ভিষন খুশি। এই প্রথম এলেনবাড়ি চাবাগানে এত বড় ক্যাম্প হলো। এদিন অনেক চিকিৎসাক এসেছিলো। হয়েছে শারিরীক অনেক পরিক্ষা, যা সম্পুর্ন বিনা মুল্যে। আমাদের মত শ্রমিকদের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানো অসম্ভব। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি চা শ্রমিকদের জন্য আজ বিনে পয়শায় চিকিৎসা পৌছে দিয়েছে চাবাগানে। এতে চাবাগানের শ্রমিকেরা ভিষন খুশি।


এলেনবাড়ি চাবাগানের সিনিয়র ম্যানেজার হেমন্ত গোপিয়া বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সব থেকে বড় উপকার করলেন আজ। দুয়ারে সরকার, দুয়ারের রেশন আর এবার চালু হল দুয়ারে ডাক্টর, যা শ্রমিকদের অনেক সমস্যা সমাধান করবে। শ্রমিক পরিবারের পক্ষে বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানো কষ্টকর। বিনে পয়শায় চাবাগানে ডাক্তারি শিবির হওয়ায় আমরাও খুশি। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করবো আবার যেন এরকম শিবির হয় এই চাবাগানে।

জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের অ্যাডিশনাল সুপারটেন্ডেন ডক্টর সুরজিত সেন এবং মালবাজারের অ্যাসিস্ট্যান্ট সি এম ও এইচ দীপ সামন্ত বলেন এটা পাইলট প্রজেক্ট। এই রাজ্যে মঙ্গলবার এলেনবাড়ি চাবাগানের মধ্যে দিয়ে দুয়ারে ডক্টর চালু হলো। আগামিকাল মেটেলি ব্লকের আইবিল চাবাগানে এই শিবির হবে। এদিন এই শিবিরে ১০ জন চিকিৎসা, নার্স, আশা কর্মি, ফার্মাসিস্ট, এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মিরা ছিলেন, সব বিভাগের চিকিৎসাক ছিলেন এই শিবিরে। ভালো সারা মিলেছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে এই শিবির। আশা করা যাচ্ছে এই শিবিরে ১২০০ শ্রমিক চিকিৎসা পরিসেবা গ্রহন করবে। শ্রমিকেরাও ভিষন খুশি এই পরিসেবা পেয়ে। আগামিতে অন্যান্য জায়গায় হয়ে দুয়ারে ডক্টর।

মঙ্গলবার বাগ্রাকোটের পর বুধবার মেটেলিতে দুয়ারে ডক্টর কর্মসুচি চললো। দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশনের পর এবার চালু হলো “দুয়ারে ডাক্তার” কর্মসূচি। রাজ্যে এই প্রথমবার পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির করা হলো। বুধবার মেটেলি ব্লকের আইভিল চা বাগানের হাসপাতালে রাজ্যের দ্বিতীয় ওই শিবির হয়। মূলত, প্রত্যন্ত ও দূর্গম এলাকার যে সকল প্রান্তিক মানুষ সরকারি স্বাস্থ্য পরিসেবা সচরাচর পান না, অথবা চিকিৎসকরাও তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেন না তাদের কাছে স্বাস্থ্য পরিসেবা পৌছে দিতে রাজ্য প্রশাসন বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ বলে জানান স্বাস্থ্য সচিব নারায়ন স্বরূপ নিগম।

আইভিল চা বাগানের হাসপাতাল চত্বরে আয়োজিত শিবিরে বাগানের চা শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ যে ভাবে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছেন এবং রাজ্য প্রশাসনকে অকুণ্ঠ প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাতে আগামী দিনে এ ধরনের শিবিরের চাহিদা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা।

নাক- কান- গলা, শিশুরোগ, স্ত্রী রোগ, চোখ, জেনারেল মেডিসিন, চর্মরোগ সহ একাধিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা নিয়ে এদিন জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের একঝাক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পাশাপাশি মাল ও মেটেলি ব্লক হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক শিবিরে উপস্থিত থেকে রোগীদের চিকিৎসা করেন।শিবিরে রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধও দেওয়া হয়েছে।শিবিরের উদ্বোধনে জেলা প্রশাসনের তরফে অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য,সি এম ও এইচ অসীম হালদার, মেটেলির বি ডি ও বিপ্লব বিশ্বাস, মাটিয়ালি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিক্রম রুনডা, জেলা পরিষদের সদস্যা আশ্রিতা লাকরা মুন্ডা সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

