News Britant

বধূ নির্যাতনে অভিযুক্ত রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক, ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে পাশে দাঁড়ালো পড়ুয়ারা

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )

#রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাপস পালের পর এবার জীববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিবেক রায়ের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ আনলেন তার স্ত্রী রিমু রায় সরকার। বিবেকবাবুর বাড়ি কোচবিহারে হলেও চাকরির সূত্রে তিনি রায়গঞ্জে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখছিলেন না তিনি। স্বামীর খোঁজ করতে তাই রীমাদেবী কোচবিহার থেকে রায়গঞ্জে এসে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীর সাথে দেখা করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই স্বামী দুর্ব্যবহার কিরে মারতে আসেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

এরপরই রায়গঞ্জ থানায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। স্বামী সহ শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দেওর এর বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন তিনি। অধ্যাপক বিবেক রায়ের স্ত্রী রীমা দেবী জানান, ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর আমাদের বিয়ে হয়। তার কিছুদিন পর পি এইচ ডির অজুহাত দিয়ে উনি রায়গঞ্জে চলে আসেন। আমার সঙ্গে কোনোরকম যোগাযোগ উনি রাখছিলেন না। ওনার বাড়ির লোকেরা এই সুযোগে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছে। বিশেষ করে আমার শ্বাশুড়ি। এর আগেও আমি ওনার খোঁজ করতে রায়গঞ্জে এসেছি, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আমাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য এতদিন আমি চুপচাপ সব সহ্য করছিলাম।

রীমাদেবীর বাবা নৃপেন রায় সরকার জানান, দুই ভাগে নয় লক্ষ ও আট লক্ষ মোট ১৭ লক্ষ টাকা, দামী চারচাকা গাড়ি, ১৫ ভরি সোনা ও দামী আসবাবপত্র সহ অনেক টাকা খরচ করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু জামাই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না। মেয়ের শ্বাশুড়ি জামাইয়ের কথায় অত্যাচার করছে বউএর ওপর। এমনকি তার মেয়েকে হত্যা করার চেষ্টাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ না করা গেলেও ফোনে তার বাবা অতুল রঞ্জন রায়ের সাথে কথা হয়। অতুলবাবু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পুতবধূর ওপরই পালটা দোষারোপ করেন। যোগাযোগ করা হয় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান পার্থ সারথী নন্দীর সাথে। তিনিও অধ্যাপক বিবেক রায়ের কর্মক্ষেত্রে সুনামের কথা উল্লেখ করে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এইসব ব্যক্তিগত ব্যাপার কাজের জায়গার বাইরে মিটিয়ে নেওয়া উচিত। অধ্যাপক নিজে খুব ভদ্র ও শান্ত এবং খুবই মেধাবী একজন অধ্যাপক। উনি কাউকে নির্যাতন করবেন ঠিক বিশ্বাস হয় না। ওই মহিলাই বরং বারবার এসে কাজের জায়গায় একটা বিচ্ছিরি পরিস্থিতি তৈরি করছেন।

একই কারণে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলো জীববিদ্যা বিভাগের পড়ুয়ারা। অধ্যাপকের স্ত্রী বধূ নির্যাতনের মামলার পাশাপাশি অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন। এরই প্রতিবাদে এদিন বেলা ৩টায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন জুলজি বিভাগের পড়ুয়ারা। মিজানুর রহমান নামের এক পড়ুয়া বলেন, অধ্যাপকের স্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন কারণ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তারা সমস্ত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। এছাড়াও তিনি বলেন অধ্যাপক তাপস পাল এর সাথে তার তুলনা করা টাও ঠিক নয় কারণ তিনি অভিযুক্ত, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। অপর এক ছাত্রীর কথায়, পারিবারিক ঘটনা জানা নেই তবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ওনার সাথে ওনার স্ত্রীর দেখাও হয় নি। তাই দুর্ব্যবহারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

Leave a Comment

Also Read