





#মালবাজার: প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকে। বৃহস্পতিবার শিলাবৃষ্টির পর শুক্রবার ও শনিবার সন্ধ্যার বিধ্বংসী কালবৈশাখী তে গোটা ব্লক মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলো প্রায় ১৫০০ বাড়ি। এর মধ্যে বেশ কিছু পরিবার ঝড়ের তান্ডবে মাথা গোঁজার আস্তানা খুঁইয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। ধ্বংসের বীভৎসতা এখানেই থেমে নেই। বাড়ির ওপর গাছ পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার।


তাঁর নাম শিল্পী দাস (২৪)। বাড়ি আংরাভাসা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর নুনখাওয়াডাঙ্গা গ্রামে। ওই গৃহবধূ তাঁর নাবালক সন্তান কে ঘুমিয়ে ছিলেন। বাড়ি লাগোয়া একটি খেজুর গাছ উল্টে শোবার ঘরের ওপর পড়লেই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। গোটা এলাকা শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছে। ব্লক প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক রণিত বিশ্বাস বলেন, মূলত লুকসান, আংরাভাসা দুই ও আংরাভাসা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাই সবথেকে বেশি কালবৈশাখীতে ক্ষতির শিকার।


আমাদের কাছে প্রাপ্ত প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ১৩৫০ টি বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতের নজিরবিহীন শিলাবৃষ্টির মুখে পড়ার পর মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মতো শুক্রবার রাতে কালবৈশাখী নতুন করে বিপর্যস্ত করে দেয় ভুটান সীমান্তের ক্যারন চা বাগানকে। সেখানে প্রচুর শ্রমিক আবাসের টিনের চাল উড়ে যায়। ওই বাগানটির প্রাথমিক স্কুলের দশাও বর্তমানে বেহাল।


লুকসান থেকে ক্যারনে যাওয়ার রাস্তায় একটি টুকরো ফরেস্টে দুটি বিশাল শাল গাছ উপড়ে পড়লে ওই পথে চলাচল দীর্ঘক্ষন বন্ধ হয়ে যায়। ভোর পাঁচটা নাগাদ লুকসান থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ক্যারন চা বাগানের একটি বিয়ে বাড়িতে মাছ নিয়ে যাচ্ছিলেন মহম্মদ মোনা নামে এক টোটো রিস্কা চালক। তাঁর এমনই দূর্ভাগ্য তাঁর চলতি টোটো- র দু পাশে দুটি গাছ উপড়ে পড়ে। এর ফলে রাস্তার মাঝ খানে আটকে পড়েন ওই ব্যক্তি। প্রায় ঘন্টা পাঁচেকের কসরৎ এর পর ডায়না রেঞ্জের বন কর্মীরা গাছ কেটে রাস্তা উন্মুক্ত করার পর অবরুদ্ধ হয়ে পড়া ওই ব্যক্তি রেহাই পান।

চ্যাংমারি চা বাগানেও প্রচুর গাছ উপড়ে পড়ে। সেখানকার লোয়ার চ্যাংমারি টিজি প্রাথমিক স্কুলটি বর্তমানে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কিশোর লামা বলেন, সোমবার থেকে খোলার পর এখানে আর ছাত্রছাত্রীদের বসতে দেওয়া সম্ভব নয়। উত্তর নুনখাওয়াডাঙ্গার চাঁদ বিনোদ রায় নামে এক বাসিন্দা বলেন, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। বহু পরিবার ক্ষতির শিকার। এক গৃহবধূর এমন মৃত্য মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনিক সাহায্য না পেলে ক্ষতিগ্রস্থদের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।






