News Britant

বাংলাদেশে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন সাংসদ চিত্রনায়ক ফারুক, শেখ হাসিনার শোক প্রকাশ

Listen

( খবর টি শোনার জন্য ক্লিক করুন )


#হাবিবুর রহমান, ঢাকা: ভক্ত-সুহৃদের কাঁদিয়ে পরপারে পারি দিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও  সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন জানান, তাঁর বাবার মরদেহ মঙ্গলবার ভোরের ফ্লাইটে ঢাকায় আসবে। নায়ক ফারুকের মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন তার লাখো ভক্ত।

এদিকে, ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার অভিনীত চলচ্চিত্র দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার অবদান দেশের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। রাষ্ট্রপতি মরহুম আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের আত্মার শান্তি কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। এ ছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, পরিচালক সমিতিসহ অনেক সংগঠনই শোক প্রকাশ করেছে।

উল্লেখ্য, নায়ক ফারুক দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।   আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন ফারুক। সিঙ্গাপুরে নিজের পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক দিন পর তার মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যর্থ হয়।

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। প্রায় পাঁচ দশক ঢালিউডে অবদান রেখেছেন অভিনেতা ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামি লিগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

বাংলাদেশে অভিনেতা থেকে সরাসরি রাজনীতিতে নেমেছেন যে ক’জন শিল্পী, তাদের মধ্যে অন্যতম নায়ক ফারুক। তিনি মানুষের কাছে নায়ক ফারুক হিসাবেই বেশি পরিচিত বলে তার সহকর্মীরা মনে করেন। চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালকরা বলেছেন, গ্রামীণ প্রতিবাদী চরিত্রে অভিনয়ে নায়ক ফারুক ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং সেটাই ছিল তার জনপ্রিয়তার বড় ভিত্তি। অভিনেতা ফারুক ছাত্রজীবনে ১৯৬৬ সালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীণতার দাবি সম্বলিত ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা হয়েছিল। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

Leave a Comment

Also Read