



#ঢাকা: ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বৃদ্ধির আরেকটি দ্বার খুলতে যাচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বর। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। সড়কপথে পণ্য পরিবহনে খরচ বেশি। সময়ও বেশি লাগে। কিন্তু রেলে পণ্য পরিবহনে দুটোই সাশ্রয়ী। আগামী সেপ্টেম্বরে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন হবে বলে আশ্বস্ত করলেন বাংলাদেশের রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেছেন, “ওই রেলপথ প্রকল্পের কাজ আগামী জুন মাসে শেষ হবে। এরপর ট্রায়াল শেষে সেপ্টেম্বরেই ভারত-বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রী রেলপথটি উদ্বোধন করবেন।”
বুধবার দুপুরে আগরতলায় ডুয়েলগেজ এ রেলপথ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। রেলপথটি নির্মাণের কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। এ পথে প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন চলবে জানিয়ে সুজন বলেন, “এতে দুদেশের মানুষই সুবিধা পাবেন।”মন্ত্রী বলেন, “রেলপথটি চালু হলে বাণিজ্যের আরেকটি দ্বার খুলবে। সড়কপথে পণ্য পরিবহনে খরচ বেশি। কিন্তু ট্রেনে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হবে।”এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত সাত রাজ্যের অন্যতম প্রবেশদ্বার ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা ভায়া বাংলাদেশের আখাউড়া। এরআগে শুক্রবার ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীও এ রেলপথ চালুর কথা জানিয়েছিলেন। তিান বলেছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব আগরতলা-আখাউড়া রুটের রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকরের উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তার সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ১৫০ কোটি রুপি এই প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়েছে।‘কেন্দ্রের এই বরাদ্দের জেরে এ লাইনের কাজ অনেকদূর এগিয়েছে। তিনি বলেন, যে গতিতে কাজ এগোচ্ছে-তা অব্যাহত থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে আগরতলা-আখাউড়া লাইনে।’ব্রিটিশ আমলে আগরতলার সঙ্গে আখাউড়ার সরাসরি যাত্রী পরিবহন হতো। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর সেই যোগাযোগে ছেদ পড়ে। তারপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী ৫ দশকেও এই লাইনটি আর চালু করা হয়নি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারি পর্যায়ে এই রেল নেটওয়ার্কটি পুনরায় চালু বিষয়ক একটি এমওউ (মেমোরন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং স্বাক্ষরিত হয়)। সেই এমওইউ’র আওতায়ই শুরু হয়েছে এই লাইনটি পুনর্গঠন ও পুনঃস্থাপনের কাজ। আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা রুটের রেলে যাত্রী পরিবহন শুরু অন্তত ১০ ঘণ্টা সময় বাঁচাতে পারবেন। বর্তমানে এই রুটের যাত্রীদের আগরতালা থেকে কলকাতা যেতে সময় লাগে ৩১ ঘণ্টা।কিন্তু ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতা যেতে সময় লাগবে মাত্র ছয় ঘণ্টা। অর্থাৎ আগরতলা-ঢাকা দুই ঘণ্টা আর ঢাকা-কলকাতা চার ঘণ্টা।এতোবড় সুযোগটা এসেছে পদ্মাসেতুর সুফলে। এখানে অবশ্য কাস্টমস-ইমিগ্রেশন সময় ধরা হয়নি।
