



#দেবলীনা ব্যানার্জী, রায়গঞ্জ : মানুষের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখে মিউজিয়াম। ১৯৭৭ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে ১৮ মে দিনটিতে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মিউজিয়াম ডে। সংস্কৃতি ও ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এই দিনটি পালিত হয়। বৃহস্পতিবার কর্ণজোড়ায় উত্তর দিনাজপুর জেলা সংগ্রহালয়ে পালিত হল আন্তর্জাতিক সংগ্রহালয় দিবস। উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তারকনাথ চন্দ, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক অভিজিত বিশ্বাস, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা ইতিহাসবিদ ও সমাজসেবী ডক্টর বৃন্দাবন ঘোষ, উত্তর দিনাজপুর হেরিটেজ সোসাইটির সভাপতি বিজয় সরকার, হিস্টরিকাল সোসাইটি অফ উত্তর দিনাজপুর এর সম্পাদক সোমনাথ সিংহ প্রমুখেরা।
নীলিমা বর্মন সহ অন্যান্য শিল্পীদের উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়। এই দিনটি সম্পর্কে উত্তর দিনাজপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তারকনাথ চন্দ নিজের বক্তব্যে বলেন, এই একটি বিশেষ দিন পালন করলেই শুধু হবে না, পুরোনো জিনিস সংগ্রহ করে রাখলে তাতে ফুটে উঠবে ইতিহাস। ভবিষ্যত প্রজন্ম এই ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে, সমৃদ্ধ হবে ও তারাও এগিয়ে আসবে নানান সাধারণ থেকে অমূল্য জিনিস সংগ্রহের দিকে। তিনি বলেন, আমরা বাড়িতেও নানান পুরনো জিনিস না ফেলে সেগুলো রেখে দিই।
উদাহরণস্বরূপ তিনি মাটির কলসির কথা বলেন, যে মাটির কলসির ব্যবহার কমে গেলেও এখনো অনেক বাড়িতেই সেটি দেখা যায়।
কর্ণজোড়ায় অবস্থিত এই উত্তর দিনাজপুর জেলা সংগ্রহালয়ে রয়েছে প্রচুর নিদর্শন। এদিন আন্তর্জাতিক সংগ্রহালয় দিবসে উত্তর দিনাজপুর জেলা সংগ্রহালয়ে নন্দন ফাইন আর্টসের উদ্যোগে আয়োজিত হল ছবি আঁকার কর্মশালা । প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলি চোখের সামনে দেখে কাগজ পেন্সিল নিয়ে মনোযোগ সহকারে একের পর এক স্কেচ খাতার পাতায় ফুটিয়ে তুলল প্রায় ১২০০ পড়ুয়া। এরকম একটি অভিনব উদ্যোগে যেমন খুদে শিল্পীরা খুশি তেমনই খুশি তাদের অভিভাবকরাও। তাদের অঙ্কনের প্রতি উৎসাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি পুরাতন নির্দশন সম্পর্কে জানা ও আগ্রহ বৃদ্ধি করাই মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল একদিকে অমূল্য ভান্ডার চোখের সামনে দেখে অঙ্কনের অভিজ্ঞতা অর্জন করা ও পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন করা প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনগুলি সম্পর্কে । এমন একটি বিশেষ দিনে এরকম আয়োজনের অংশ হতে পেরে অভিভূত নন্দন ফাইন আর্টস এর কর্ণধার শ্যামল কর্মকার। তিনি বলেন, চোখের সামনে লাইভ কিছু দেখে ছবি আঁকা শিল্পীসত্ত্বাকে বিকশিত করে। এর আগেও আমরা প্রকৃতির সান্নিধ্যে এমন কর্মসূচি আয়োজন করেছি। তবে মিউজিয়ামে এই প্রথম। আগে না জানলেও এখানে এসে জানলাম আজ আন্তর্জাতিক মিউজিয়াম ডে। এমন সংযোগে সত্যিই অভিভূত। সিদ্ধান্ত নিয়েছি এরপর থেকে প্রতিবছর এই বিশেষ দিনে এমন কর্মসূচি আয়োজন করা হবে। এই অঙ্কন কর্মশালায় উপস্থিত খুদে শিল্পীরাও প্রচন্ড খুশি চোখের সামনে এমন সব স্থাপত্য দেখে। রায়গঞ্জের বেথানি স্কুলের ছাত্রী সংযুক্তা রায়চৌধুরী যেমন এখানে এসে উচ্ছ্বসিত তেমনই খুদে পড়ুয়া চতুর্থ শ্রেণীর আদিত্য দাস বা পঞ্চম শ্রেনীর শ্রাবন্তী গোস্বামী সবাই একবাক্যে নিজেদের আনন্দের কথা প্রকাশ করল। চোখের সামনে এমন সব স্থাপত্য, মুদ্রা, প্রাচীন ইঁট ইত্যাদি দেখে যতটা সম্ভব খাতার পাতায় তুলে নিতে ব্যস্ত দেখা গেল অঙ্কন শিল্পীদের।
